দুই নারী খুন,একজনের স্বামী আটক
সিরাজগঞ্জে পৃথক ঘটনায় এক গৃহবধূসহ দুই নারীকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ঘটনায় নিহত গৃহবধূর স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে দুটি লাশই উদ্ধার করে পুলিশ। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার সয়াধানগড়া মধ্যপাড়ার নয়ন মোড় মহল্লায় মারুফা খাতুন (৩২) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ ও সদর উপজেলার সায়দাবাদ আশ্রয়কেন্দ্র এলাকা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় আরেক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দুটি মৃত্যুর ঘটনায় সদর থানায় দুটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, গৃহবধূ মারুফা খাতুনকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ ওঠে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মধ্যপাড়া মহল্লার একটি বাড়ির বারান্দার ধরনা (আড়া) থেকে মারুফার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের স্বামী মনোয়ারুল ইসলামকে আটক করেছে। পুলিশ আরো জানায়, নিহত মারুফা রায়গঞ্জ উপজেলার ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নের কালিয়াবাড়ী গ্রামের আবদুল মান্নানের মেয়ে। নিহতের বড় বোন ইয়াসমিন আক্তার জানান, সাত বছর আগে রায়গঞ্জ উপজেলার নলকা ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জের নলছিয়া গ্রামের মোকলেস শেখের ছেলের সঙ্গে মারুফার বিয়ে হয়। তাঁদের একটি ছেলেসন্তানও আছে। ইয়াসমিন আক্তার আরো জানান, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই মারুফাকে নিয়ে মনোয়ারুল সিরাজগঞ্জ শহরের নয়ন মোড় এলাকায় ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। তাঁদের সঙ্গে থাকতেন মনোয়ারুলের বড় ভাই ও ভাবীও। আর এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই তাঁদের সংসারে ঝগড়া লেগেই থাকত। আর মারুফাকে মাঝেমধ্যেই মারপিট করতেন তাঁর স্বামী। ইয়াসমিন আক্তার অভিযোগ করেন, গতকাল সোমবার মারুফা বাবার বাড়ি আসতে চাইলে মনোয়ারুল, তাঁর বড় ভাই ও ভাবী বাধা দেন। এরই একপর্যায়ে মারুফার সঙ্গে তাঁদের কথাকাটাকাটি হয়। এর জেরে সোমবার রাতেই মারুফাকে পেটায় তাঁর স্বামী। একপর্যায়ে মারুফা মারা গেলে মনোয়ারুলের ভাই ও ভাবী মিলে ঘরের বারান্দায় তাঁর মৃতদেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালায়। মারুফার মাথা, হাঁটু ও মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইয়াসমিন আক্তার। এদিকে পুলিশ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আজ মঙ্গলবার সকালে বারান্দায় মারুফা খাতুনের ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। রফিকুল ইসলাম আরো জানান, প্রাথমিক সুরতহালে নিহতের মাথা, হাত, পায়ে ও মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্ত শেষ না হলে বিস্তারিত কিছু বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন রফিকুল ইসলাম। ওসি-তদন্ত আরো জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এদিকে সিরাজগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আজিম আহমেদ জানান, জেলা শহরের পুনর্বাসন এলাকার পুকুরপাড়ে ৪০ বছর বয়সী অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর মরদেহ পড়েছিল। খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। আজিম আহমেদ আরো জানান, ধারণা করা হচ্ছে অন্য কোথাও হত্যার পর ওই নারীকে আশ্রয়কেন্দ্র এলাকায় এনে ফেলে রাখা হয়েছিল।