রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনায় বসতে অং সান সু চির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন সু চিকে ফোনে এ আহ্বান জানান বলে পররাষ্ট্র দফতরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়। এসময় তিনি রাখাইনে মানবিক সংকট সমাধান ও সেখানে ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করতে দেশটির সরকারকে তাগিদ দেন। এদিকে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা বিরোধী সামরিক অভিযান দ্রুত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
মঙ্গলবার সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনের প্রথম দিনেই উঠে আসে শতাদ্বীর ভয়াবহতম রোহিঙ্গা সঙ্কট প্রসঙ্গ। সংস্থার মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস তার উদ্বোধনী ভাষণে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদান ও তাদের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। যে কোনো মূল্যে রাখাইনে দ্রুত সংঘাত বন্ধের তাগিদ দেন তিনি।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর পাশাপাশি সেখানে চলমান সংঘাত বন্ধে মিয়ানমার সরকারের দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সংঘাতের কারণে পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়া শরণার্থীদের নিরাপদে মিয়ানামারে ফিরিয়ে নিতে হবে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের আহ্বান সত্ত্বেও রাখাইন পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না হওয়ায় আমরা মর্মাহত।’
জাতিসংঘ মঞ্চে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রথম বক্তব্যে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ না টানলেও, তার পরপরই ভাষণে, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি রাখাইন পরিস্থিতিকে বসনিয়া ও রুয়ান্ডায় গণহত্যার সঙ্গে তুলনা করেন।
এদিকে, রাখাইন নিয়ে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের পরপরই, তাকে ফোন করে রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। তিনি রাখাইনে সহিংসতা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দিয়ে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার বিষয়ে সু চির প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন।
ওদিকে, চীনের পক্ষ থেকে মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠায় দেশটির সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার চীনা পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র লু ক্যাং এক বিবৃতিতে বলেন, রাখাইন নিয়ে সু চির বক্তব্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সেখানকার পরিস্থিতি বুঝতে সহযোগিতা করবে। একইসঙ্গে চলমান সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমার সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতার কথাও জানান তিনি।
এর মধ্যেই রাখাইনে রোহিঙ্গা হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সেখানে প্রবেশাধিকার দিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘের তদন্তকারী দল।
এদিকে, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে অং সান সু চি’র আশ্বাসকে ভাওতাবাজি বলে আখ্যা দিয়েছেন রোহিঙ্গারা।