এ,কে,এম শফিকুল ইসলামঃ রাখাইন সঙ্কট নিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া মিয়ানমারে নেত্রী অং সান সু চির বক্তব্যে হতাশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। বুধবার সকালে জাতীয় প্রসে ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দলের পক্ষ থেকে তাদের এই অবস্থানের কথা জানান।
তিনি বলেন, “গণমাধ্যমে আমরা অং সান সু চির যতটুকু ভাষণ পড়েছি, তাতে হতাশ হয়েছি। সেই ভাষণ সমর্থনযোগ্য নয়।
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবিতে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের উদ্যোগে এই মানববন্ধন হয়।
গত ২৪ অগাস্ট রাখাইনের সেনা ও পুলিশ চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর থেকে সেখানে চলতে থাকা সেনাবাহিনীর অভিযানে বিশ্বব্যাপী সমালোচনার প্রেক্ষাপটে গত মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন সু চি।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া আট লাখ রোহিঙ্গাকে শরণার্থীদের ‘যাচাই করে’ ফেরত নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন সু চি।
সু চির বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “বক্তব্যে আপনি বলেছেন, ৫ সেপ্টেম্বরের পরে রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা হয়নি, বন্ধ হয়ে গেছে। আপনি আন্তর্জাতিকভাবে অত্যন্ত পরিচিত একজন নেত্রী সেই দেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের জন্য। এতবড় মিথ্যা কথা আপনি বললেন কী করে?
“তাহলে দুই সাপ্তাহ ধরে এতো গ্রাম পুড়ল, এতো বাড়ি-ঘর আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হল, এতো মানুষের মৃত্যু, এতো শিশুকে নাফ নদীতে নিক্ষেপ করা হল, এসব অবলীলায় আপনি অস্বীকার করলেন।”
রিজভী আরো বলেন, “আপনি একবারও রোহিঙ্গা কথাটি উচ্চারণ করেননি আপনার বক্তব্যে। আপনি বলেছেন সেখানে বসবাসকারী মুসলিম। আপনি তো গণতন্ত্রের নেত্রী নন, আপনি তো সাম্প্রদায়িক। আপনার দেশের রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু মুসলমান, হিন্দুও আছে। এই নির্যাতনের মধ্যে অনেক হিন্দুও নির্যাতিত হয়েছেন এবং বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। কিন্তু আপনি টার্গেট করে বলছেন মুসলিম। এটা তো ভয়ংকর ব্যাপার।”
রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে সু চির বক্তব্য মানবতাবিরোধী উল্লেখ করে রিজভী বলেন, “রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক এটা সু চি তার বক্তব্যে স্বীকার করেননি। বরং তিনি তাদেরকে শরণার্থী স্ট্যাটাস দিতে চান- সেটা তার বক্তব্যে এসেছে।
“আমরা স্পষ্টভাষায় সু চিকে বলতে চাই, অবিলম্বে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে।”