মিরপুরের মানসিক অসুস্থ সেই রিতা-মিতা
রাজধানীর মিরপুরের মানসিক ভারসাম্যহীন দুই বোন রিতা-মিতা আবার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মানসিক সমস্যা নিয়ে তিন সপ্তাহ ধরে তাঁরা রাজধানীর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানান, দীর্ঘদিন ওষুধ না খাওয়া ও একাকিত্বের কারণে রিতা-মিতার মারাত্মক মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থা দেখা দিয়েছে। ভালো নার্সিংয়ের পাশাপাশি নিয়মিত ওষুধ সেবন করলে তাঁরা আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন বলে আশা করছেন চিকিৎসকরা। আইনুন নাহার রিতা পেশায় চিকিৎসক, আর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন নুরুন নাহার মিতা। ২০০৩ সালে তাঁদের মা মারা যাওয়ার পর দুই বোনই ভয়াবহ মানসিক সমস্যায় পড়েন। কোনো দরকার ছাড়া বাসা থেকে বের হতেন না রিতা-মিতা। মিরপুর এলাকায় রিতা-মিতাদের বাড়িটি ‘ভূতের বাড়ি’ নামে এলাকায় পরিচিতি পায়। ২০০৫ সালের ৭ জুলাই একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে রিতা-মিতাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সুস্থ হয়ে দুই বোন স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসেন। সুস্থ হয়ে রিতা একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে চাকরিও নেন। কিন্তু ২০১৩ সাল থেকে আবার ঢাকা থেকে উধাও হয়ে যান দুই বোন। পরে বগুড়ার একটি আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয়। তিন সপ্তাহ আগে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। এ সময় তাঁরা নিজেদের সুস্থ দাবি করে কথা বলেছেন। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মো. ফারুক আলম বলেন, ‘এদের কানে শব্দ আসে, শব্দ মানে গায়েবি আওয়াজ, ওরা ওদের দেখা মানুষের সঙ্গে, আমরা দেখি না কিন্তু এরা দেখে, কথা যখন শোনে তখন উত্তর দেয়। উত্তর দিতে গেলে ওরা একলা একলা কথা বলে, একলা একলা হাসে। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে কোনো ব্যক্তিকে সন্দেহ হলে তার ওপর রাগ করে।’ তিনি আরো বলেন, আমাদের কয়েক দিন হলো, দুজনেরই ইমপ্রুভমেন্ট হয়েছে। একজনের ইমপ্রুভমেন্ট তুলনামূলক বেশি হয়েছে। বড় বোন আইনুন নাহার রিতা বলেন, ‘আমরা সবার ভালো হোক, মঙ্গল হোক এই জন্যই চাইতেছি। এটাই বলতেছি, এটাই ম্যাসেজ। অপর ছোট বোন নুরুন নাহার মিতা বলেন, ‘আমরা খোদাতায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতেছি এবং সাহায্য প্রার্থনা করতেছি। হে আমার প্রভু, আমার প্রার্থনা কবুল করো। ১৯৯৪ সালে বড় বোন কামরুন নাহারের বিয়ে হয়ে গেলে পরিবারের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ে। বর্তমানে দুই বোনের চিকিৎসা থেকে শুরু করে যাবতীয় দায়িত্ব পালন করছেন কামরুন নাহার।