ডিজিটাল ভূমি কার্যালয়ে পদে পদে হয়রানি, টাকার বিনিময়ে সেবা
ভূমি জটিলতা ও হয়রানি ঠেকাতে দেশের ২০টি উপজেলায় স্থাপিত হয়েছে ভূমি ডিজিটাল সেন্টার। নকশা, মৌজা, মিউটেশন, রেকর্ডের যাবতীয় তথ্য গ্রাহক এখন ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখতে পাবেন। কিন্তু তারপরও নকশা, মৌজা, খারিজ, পরচা, দলিল সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্যের জন্য ভূমি কার্যালয়ে পদে পদে হয়রানির খবর নিত্যদিনের। টাকা ছাড়া সেখানে একটি কাজও হয় না—ভুক্তভোগীদের এমন অভিযোগের খবর স্থান পায় গণমাধ্যমে।
শুনানিসহ নানা রকম উদ্যোগ গ্রহণেও হয়রানির মাত্রা কমছে না বলে অভিযোগ ভূমি-সংক্রান্ত সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীদের।
তবে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান আহমেদ জানিয়েছেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সারা দেশে স্থাপন করা হবে এই সেন্টার। আর রেজিস্ট্রেশনসহ অন্যান্য কার্যক্রম এ প্রক্রিয়ায় আনার সব কাজ চূড়ান্তের পথে বলেও জানান তিনি।
ভূমিসেবা নিতে আসা এক ব্যক্তি বলেন, ‘দালালের প্রতারণায় আমরা আর বাঁচি না। আইয়া প্রথমে হ্যারে দিই এক হাজার, হেই কই দোতলায় যাও, দোতলায় যাইয়া দিই এক হাজার। আবার তিন তালায় দেও, চারতালায় দেও। দিতে দিতে আমাগোর জান তো শ্যাষ।’
আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘সকালে ফোন দিয়ে বলছে তিনশ টাকা লাগবে, ঘোরাঘুরি-টুরি করা লাগবে। আর ওখানকার জন্য যা লাগবে তাই হাতে করে আইসেন।’
গ্রাহকদের অভিযোগ, কাজের জন্য নির্ধারিত টাকার বাইরে তাঁরা বাড়তি টাকা নিচ্ছেন।
ভোগান্তি এড়াতে দেশের ২০টি উপজেলায় স্থাপন করা হয়েছে ভূমি ডিজিটাল তথ্যকেন্দ্র। পুরোনো দলিল আর জমি-সংক্রান্ত সব সেবা এখন এখান থেকেই দেওয়া হচ্ছে গ্রাহকদের।
এ বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বজলুল হক বিশ্বাস বলেন, একজন ভূমি মালিকের যাবতীয় তথ্য সেখানে তাঁর মৌজা, খতিয়ান নম্বর যাবতীয় বিষয় স্ক্যান করে একটি কাঠামোর আওতায় আনা হবে যাবতীয় তথ্য। এই তথ্য তিনি সহজেই পেতে পারবেন। তাঁকে একটি কোডিংয়ের আওতায় আনা হবে। ওই কোড ব্যবহার করে তিনি যেকোনো কম্পিউটার থেকে কিংবা উপজেলা তথ্য ও সেবাকেন্দ্রে গিয়ে তাঁর কোডটি যদি দেন, তাৎক্ষণিকভাবে তিনি যাবতীয় তথ্য পাবেন।
ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান আহমেদ বলেন, ‘হয়রানির বিকল্প হচ্ছে ডিজিটালাইজেশন, অর্থাৎ অটোমেশন। আমরা আমাদের এক হাজার ৩০০ কোটি টাকার প্রজেক্টে অটোমেশনের কাজটা শুরু করব। যেটা আমাদের জন্য একটা বিশাল অর্জন হবে। আমরা যখন ইন্টিগ্রেশন প্রসেসে যাব, তখন কিন্তু সিস্টেমের মধ্যে চলে আসবে। তখন হয়রানি কমে যাবে।
এ ছাড়া ভূমি-সংক্রান্ত সব তথ্য গ্রাহকরা যাতে মোবাইল ফোনে পেতে পারেন, তার জন্য এরই মধ্যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী।