সিটিং সার্ভিস বন্ধ হয়নি, চলছে চিটিং লোকাল সার্ভিস।
রাজধানীর গণপরিবহন ইতিহাসে সাধারণ যাত্রীর জন্য সিটিং সার্ভিস ছিল যাত্রী দুর্ভোগের অন্য নাম। সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও লোকালের মত গাদাগাদি করে যাত্রী উঠানো পরিবহন সংশ্লিষ্টদের অন্যায় আবদার ছিল দীর্ঘ দিনের।
যাত্রী দুর্ভোগ বন্ধ করতে গিয়ে গত তিন দিনে সাধারণ যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে আরেক কোনঠাসা দুর্ভোগে। বিআরটি এর সিটিং সার্ভিস বন্ধের উদ্যোগের সাথে গুটি কয়েক পরিবহন মালিক সায় দেয়। কিন্তু কাগজ পত্র ও ফিটনেস বিহীন এবং পরিবহন খাতের অসাধু গুটি কয়েক লোকের কারণে রাস্তায় গাড়ি বের না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে সাধারণ যাত্রীরা।
গুলিস্তান থেকে ফতুল্লাগামী আনন্দ পরিবহনের এক যাত্রী আকাশ বলেন, গত দুই দিনে পূর্বের ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করলাম। সিটিং বন্ধের ঘোষণা হলেও কাউন্টারগুলো এখনও চালিয়ে যাচ্ছে পূর্বের মতোই বাড়তি ভাড়া আদায় । সিটিং সার্ভিস বন্ধ হলে কাউন্টারগুলো চালু কেন ? তবে কি লোকাল নামে প্রতারণায় আমারা যাত্রীরা দ্বিতীয় দফায় ঠকছি ? গাড়ি লোকাল হলে মানুষের গাদাগাদি মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু ভাড়া হবে লোকাল ভাড়ায় অর্ধেকে। অথচ সিটিং ভাড়া দিয়ে লোকালের মতো যাচ্ছি।
বোরাক পরিবহনের নিয়মিত যাত্রী মুন্নি বলেন, গুলিস্তান থেকে ১৫ টাকায় টিকিট কেটে উঠলাম। সিটিং আদলে উঠে দেখি গাড়িতে সিট খালি নেই। গাদিগাদি করে টিকিট ছাড়া অনেকেই উঠেছে। সিটিং ভাড়া ধোলাইপাড় পর্যন্ত নিচ্ছে ১৫ টাকা। অথচ সরকারের নির্ধারিত ভাড়া ৭ টাকা। তবে কেন এ অনিয়ম মেনে নেব? সিটিং আদলে লোকালে যাচ্ছি এ কেমন অন্যায় আবদার।
সরকার কে বৃদ্ধা আঙ্গলী দেখাচ্ছে আনন্দ পরিবহন। তারা কাউন্টার বন্ধ না করে সিটিং সার্ভিস চালু রেখেছে। তাদের বক্তব্য শুনলে সাধারন মানুষ ভাবে আনন্দ পরিবহন মালিকরা মনে হয় সরকার বা তারাই ক্ষমতায় আছে। আনন্দ পরিবহন স্টাফরা যাত্রীদের সাথে অশালীন ভাষায় কথাবার্তা বলেন।সাধারন যাত্রীরা চুপ চাপ ভাবে যাওয়া আসা করে।
এক ছাত্রী কেঁদেই বলেন আনন্দ পরিবহন মালিক কর্মচারীদের মা-বোন নাই, মেয়েদের বা মহিলাদের সাখে আজেবাঁজে কথা বলেন ভাই করব কি?। নিরুপায় হয়ে নোংরা গাড়ীতে চলাচল করতে হয়। দেশে তো বিচার করার মতো কেউ নাই । যারা বিচারের কথা বলে তারাও টাকা পেলে অস্বভদের দলে চলে যায়। তখন আমাদের ওপর চলে অত্যাচার। আমরা সাধারন মানুষ সাধারন ভাবেই থাকি। ভোটের সময় আসে আমাদের হা-পা ধরতে।আর এখন তো ভোট ছাড়াই সবাই পাস ।
অভিযোগ প্রসঙ্গে আনন্দ পরিবহনের সহ-সভাপতি মো. দিদার আলম বলেন, আমরা গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে পূর্বে দাম বাড়িয়েছিলাম। বর্তমানে আমরা কম ভাড়া নিচ্ছি। সরকারের নির্ধারিত ভাড়ায় গাড়ি চালানো সম্ভব নয়। কাউন্টার না থাকলে আমরা টাকার হিসেব পাবো না। তাই কাউন্টার উঠানো সম্ভব না।
বিষয়টি নিয়ে বিআরটিএর সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা বিষয়টির সামাধান কল্পে কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি ফিটনেস বিহীন গাড়ি রাস্তায় যাতে না আসে সে বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পেলে পরিবহন কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেব।