সোশ্যাল মিডিয়ায় শাকিবের নিন্দায় তুমুল ঝড় ।
দীর্ঘ দিনের আড়াল ভেঙে মিডিয়ার সামনে এসেছেন ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। রীতিমতো ফাটালেন বোমা। জানালেন তিনি ঢালিউড ‘কিং’ শাকিবের স্ত্রী। ৭ মাসের ছেলেও রয়েছে। জল ঘোলা করে শাকিব স্ত্রী-সন্তানকে মেনেও নিয়েছেন। কিন্তু, এরইমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় শাকিবের নিন্দায় ঝড় উঠেছে। মিডিয়াসহ দেশজুড়ে চলছে শাকিবকে নিয়ে নেতিবাচক নানা কথা। তাতে যুক্ত হয়েছেন দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তি।
ফিলিপাইনে বাংলাদেশ মিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার শাহনাজ গাজী এলা প্রশ্ন তুলেছেন, শাকিবের মতো লোক বাংলাদেশের শীর্ষ নায়ক (ঢাকাই চলচ্চিত্রের কিং খান) হয় কী করে। ১০ এপ্রিল সোমবার ১:২০ মিনিটে তিনি তার ফেসবুক পেজ-এ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। যেখানে শাকিবের চরিত্র, ব্যক্তিত্ব, অভিনয়দক্ষতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করেন তিনি।
তার হুবহু স্ট্যাটাসটি হলো- ‘আমাদেরও রুচির বলিহারি! অভিনয়ক্ষমতা, ব্যক্তিত্ব, চরিত্র– এসব বাদই দিলাম…এই রকম মেয়েলি চেহারা নিয়ে একটা লোক দেশের `শীর্ষ নায়ক` হলো কি করে!?
শাহনাজ গাজী এলার স্ট্যাটাসের মন্তব্যে রীতিমতো ঝড় তুলেছেন তার ফেসবুক বন্ধু ও অনুসারিরা। সাইমা সুলতানা মন্তব্য করেন, ‘বাঘ নাই বনে শিয়াল রাজা।’
নাদিয়া সুমা মন্তব্যে লেখেন, ‘তা ভাল যে ইন্ডিয়া গিয়ে ছবি করার সময় তার চুলে ছেলে কাট দেওয়া হয়েছে। তার আগ পর্যন্ত ঘাড়ের কাছে বাবরি ছিলো। না লাগত ছেলে না লাগত মেয়ে। ব্যাপারটা তখন কী দাঁড়াতো। তারপরও তিনি একজন অতি জনপ্রিয় অভিনেতা (ছিলেন)?’
শামসুল হক লেখেন, ‘ভাগ্যিস এইসব খলনায়কদের ছবি কখনও দেখিনি!’ আরেকজন লেখেন, ‘Thanks এলা, ঠিক আমার মনের কথাটা লিখেছেন। ওর তো কোন পাত্তাই থাকত না যদি সালমান এর মতো smart নায়ক বেঁচে থাকত।’
দেশের শীর্ষ মিউজিক কোম্পানি সিডি চয়েজ এর কর্ণধার ও এফবিসিসিআই এর জেনারেল বডি মেম্বার জাহিরুল ইসলাম সোহেল সোমবার ১২:৫৬ মিনিটে এ নিয়ে এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘মাননীয় শাকিব খান আপনি বাংলা চলচ্চিত্রের সুপারস্টার নাম্বার ওয়ান হিরো। এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই বলে আপনি কারো সঙ্গে বেয়াদবি করে আর অহংকার করে কথা বলতে পারেন না। গতকাল রাতে লাইভ দেখছিলাম, ৭১ টিভিতে সুপারস্টার শাকিব খান আপনি নাইমুল ইসলাম খানের মত সিনিয়র ও গুনী সাংবাদিককে নাইম সাহেব বলে সম্বোধন করতে পারেন না। আপনার চেয়ে উনি বয়সে বড়, তার সম্মানও আছে। আবার আপনি কয়েকবার উত্তেজিতভাবে কথা বলেছেন। একটা কথা মনে রাখবেন ফলবান বৃক্ষ সবসময় মাথা নিচু করে থাকে। তাই মানুষকে সম্মান করতে শিখেন। সম্মান দিলে কেউ কখনো ছোট হয় না। আর হিরো সুপারস্টার শাকিব খান আপনি কালকে লাইভে বারবার বলছিলেন, আপনি না থাকলে বাংলা চলচ্চিত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। খুব অহংকারের সহিত কথাগুলো বলছিলেন। কিন্তু, আপনার কি মনে নেই প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ ও নায়ক মান্না মারা যাওয়ার পর বাংলা চলচ্চিত্র কি ডাস্টবিনের আবর্জনা হয়ে গিয়েছিল? আজ যদি নায়ক মান্না ও সালমান শাহ বেঁচে থাকতেন, হয়ত আপনি আজকের শাকিব খান হতেন না। প্রবাদ আছে ‘অহংকার পতনের মূল’।
এই স্ট্যাটাসের মন্তব্যে একজন লেখেন, ‘শাকিব খান তুমি বলছো অপুকে বিয়ে করোনি। তার সাথে তোমার কোন সম্পর্ক ছিলোনা। আবার বলছো আমি ছেলেকে অস্বীকার করবো না, ছেলে আমার। তাহলে বিয়ে ছাড়া, সম্পর্ক ছাড়া তুমি অপুকে বাচ্চা দেওয়ার কি অধিকার রাখো? আসলে তুমি একটা লম্পট, বেয়াদব, চরিত্রহীন ও ধোকাবাজ। তোমার মতো বেয়াদবের ছায়াছবি বাংলাদেশের সিনেমা প্রেমী মানুষ আর দেখবে না। তুমি পুরুষ জাতির কলঙ্ক। জনতার আদালতে তুমি চরিত্রহীন, কলঙ্কিত ও নিষিদ্ধ একটা নাম….. শাকিব খান। ইতিহাস কোনদিন তোমাকে ক্ষমা করবে না।’
আরেকজন লেখেন, ‘শাকিবের কোন দিনও জায়গা হত না, নায়ক মান্না যদি মারা না যেতেন, ফিল্ম ইন্ড্রাস্টি চালানোর মতো কেউই ছিলো না। টাকার জন্য একের পর এক মানহীন ছবিও করে গেছে, ওনার আচরণ যতদূর শুনেছি বেয়াদবের মতো, মানুষকে সম্মান দিতে জানেনা।
প্রসঙ্গত, ঢালিউডের একসময়ের সেরা জুটি শাকিব-অপু। এই জুটির প্রেম-বিয়ে-রোমান্স নিয়ে বহুবার ঝড় বয়েছে শোবিজে। আর এবার বয়ে গেলো সাইক্লোন। সন্তান কোলে নিয়ে সোমবার বিকেলে একটি টিভি চ্যানেলে হাজির হয়ে মুখ খুলেছেন অপু বিশ্বাস। জানিয়েছেন তাদের বিয়ে ও সন্তান প্রসঙ্গে।
টিভি চ্যানেলে দেয়া লাইভ সাক্ষাৎকারে ৭ মাসের সন্তান আব্রাহামকে কোলে নিয়ে কান্না ভেজা কণ্ঠে অপু বিশ্বাস জানান, ২০০৮ সালে ১৮ এপ্রিল তারা বিয়ে করেন। শাকিবের গুলশানের বাসায় এই বিয়ে হয়। বিয়ের জন্য ধর্ম পাল্টাতে হয় তাকে, নাম হয় অপু ইসলাম খান। বিয়েতে দুই পরিবারের কাছের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। গোপালগঞ্জের এক কাজি বিয়ে পড়ান ক্যারিয়ারে দোহাই দিয়ে শাকিব এতদিন বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখতে তাকে বাধ্য করে।