শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া গণপরিবহনে বাস্তবায়নের আট দফা দাবি।
গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া বাস্তবায়নসহ আট দফা দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও মানববন্ধন করেছে যাত্রী অধিকার আন্দোলন নামের একটি সংগঠন। আজ শনিবার সকালে গণপরিবহনে যাত্রী অধিকার নিশ্চিত করতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র দাউদ ফেরদাউস বলেন, রাজধানীসহ সারা দেশে গণপরিবহনে যাত্রী হয়রানি চরম আকার ধারণ করেছে। একদিকে সিটিং বাসের নামে যাত্রীদের থেকে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি ভাড়া, অন্যদিকে ন্যূনতম সেবাও পাচ্ছে না যাত্রীরা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এসব পরিবহনে ভাড়া নির্ধারণ করে দিলেও গুটিকয়েক ছাড়া কেউ মানছে না সেই নির্দেশনা।
যাত্রী অধিকার আন্দোলনের এই মুখপাত্র আরো বলেন, পরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার বিষয়টি বরাবরই উপেক্ষিত। শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে তাদের পরিবহনে ওঠানো হয় না। জোর করে উঠলেও তাদের সঙ্গে অযাচিত আচরণ করা হয়। রাজধানীসহ সব নগর-মহানগরে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া ও দূরপাল্লার যানবাহনে শিক্ষার্থীদের ২৫ শতাংশ ভাড়া ছাড় দিতে হবে।
দাউদ ফেরদাউস বলেন, দেশে পরিবহনে নারী ও শিশুদের জন্য সংরক্ষিত আসন থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। সিট খালি না থাকার কথা বলে অধিকাংশ সময় নারী যাত্রীদের বাসে ওঠানো হয় না। এতে কর্মক্ষেত্র থেকে বাসায় ফিরতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় নারী যাত্রীদের। তাদের জন্য অবিলম্বে প্রয়োজনীয় যানবাহনের ব্যবস্থা করা এবং সব পরিবহনে নারী যাত্রীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
আগামী ২-১৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর অভিযানের ঘোষণা এবং তা বাস্তবায়নে সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান দাউদ ফেরদাউস।
বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন যাত্রী অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক কেফায়েত শাকিল, যুগ্ম আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম, বার্তা সচিব মাহমুদুল হাসান সাকুরী, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুঈন উদ্দিন আরিফ, অর্ণব সাদনিম, তাকবির মাহিন, ওয়াহিদা আক্তার তৃষ্ণা, হুমায়ুন কবির, জাহিদ হাসান, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
যাত্রী অধিকার আন্দোলনের ৮ দফা
১. সারা দেশে গণপরিবহনে সরকার নির্ধারিত ভাড়া কার্যকর করতে হবে।
২. রাজধানীসহ দেশের নগর-মহানগর ও আন্তজেলার গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া কর্যকর করতে হবে এবং দূরপাল্লার পরিবহনে শিক্ষার্থীদের ২৫ শতাংশ ভাড়া ছাড় দিতে হবে।
৩. যানজট নিয়ন্ত্রণ, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও যাত্রীদের যথাযথ সেবা নিশ্চিতে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা বন্ধ করতে হবে।
৪. নামে-বেনামে চালু হওয়া সিটিং সার্ভিসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিআরটিএর অনুমতিক্রমে কিছু স্পেশাল পরিবহন চলাচল করতে পারে, তবে তা অবশ্যই যথাযথ মানের হতে হবে।
৫. গণপরিবহনের ভাড়ায় সমতা আনতে হবে। প্রতিটি গাড়িতে ভাড়ার চার্ট রাখতে হবে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে শাস্তির ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৬. পরিবহন নৈরাজ্য বন্ধে বিআরটিএকে নিয়মিত ‘কার্যকর’ অভিযান পরিচালনা করতে হবে এবং সড়ক দুর্ঘটনা রোধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন করতে হবে।
৭. প্রাইভেট পরিবহনের চাপ কমাতে উন্নতমানের এসি, নন-এসি সার্ভিস চালু করতে হবে।
৮. ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।