Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

ভুল ভেন্যুতে বাংলাদেশকে খেলাচ্ছে ভারত

টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ব্যাপারে ভারতের ভূমিকা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে বাংলাদেশ। ২০০০ সালের জুনে বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার সঙ্গে যোগসূত্র আছে ভারতের। বাংলাদেশে অভিষেক টেস্টটা এসে খেলে গিয়েছিল তারা। এর মধ্যে ২০০৪, ২০০৭, ২০১০ ও ২০১৫ সালে বাংলাদেশের মাটিতে টেস্ট খেলে গেছে ভারত। বিভিন্ন ওয়ানডে টুর্নামেন্টেও। কিন্তু ১৭ বছর লাগল টেস্ট খেলতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানাতে। ব্যাপারটি অবাক করে বিখ্যাত ক্রিকেট লেখক বোরিয়া মজুমদারকে। ইকোনমিক টাইমসে লেখা কলামে সে প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজেছেন।বোরিয়া মজুমদারের প্রশ্ন তুলেছেন, খুব শক্তিশালী দল না হওয়ার কারণেই কি এত দিন ভারত বাংলাদেশকে নিজেদের মাটিতে ডাকেনি? ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট হলে সেটি ব্যবসায়িকভাবে সফল হবে না—এমন ভাবনাও কাজ করেছে বাংলাদেশকে আতিথ্য না দেওয়ার ব্যাপারে।এই ক্রিকেট লেখক অবশ্য বিশ্বাস করেন, সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ড্র করে বাংলাদেশ সেটি প্রমাণ করেছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েলিংটন টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬০০ রানের কাছাকাছি করার ব্যাপারটিও উদাহরণ হিসেবে এনেছেন। তাঁর মতে, ফর্মের বিচারে এই মুহূর্তে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়েও ভালো দল বাংলাদেশ। শক্তি ও সামর্থ্যে বাংলাদেশ নিজেদের প্রমাণ করে চলেছে ক্রিকেট বিশ্বে। তা ছাড়া ভারত-বাংলাদেশের লড়াই এখন অন্য রকম এক উত্তেজনাও ছড়িয়ে দেয় সমর্থকদের মধ্যে। যেটি আকর্ষণীয় এক লড়াই হয়ে উঠতে পারে।
কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের দৃষ্টিভঙ্গির যে খুব পরিবর্তন হয়েছে, সেটি বিশ্বাস করেন না বোরিয়া মজুমদার। এত ঢাকঢোল পিটিয়ে মাত্র একটি টেস্ট আয়োজনের ব্যাপারটি উদাহরণ হিসেবে দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে দ্বিতীয় ও তৃতীয় টেস্টের মাঝখানে আট দিনের ব্যবধান না রেখে বাংলাদেশের বিপক্ষে একটি টেস্ট বেশি খেলতে পারত ভারত। যদিও এটা সত্যি, ওয়ানডে আর টেস্ট দলের মধ্যে বাংলাদেশের সামর্থ্যের ব্যবধান অনেক।
বোরিয়া মনে করেন, ভেন্যু হিসেবেও ভারত ভুল মাঠকে বেছে নিয়েছে। ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে সব মাঠে খেলানোর নীতি আছে বিসিসিআইয়ের। কদিন আগে কলকাতায় ম্যাচ হয়েছে, ফলে আবার এখনই এই মাঠে ম্যাচ বরাদ্দ তারা দেবে না। কিন্তু এই এক টেস্টের সিরিজের জন্য বিসিসিআই অন্য কিছু করতে পারব বলে মন্তব্য করেছেন বোরিয়া, ‘এখানেও বিসিসিআই একটা সহজ বুদ্ধি কাজে লাগায়নি মনে হচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য হায়দরাবাদে খেলা আর কলকাতায় খেলা এক নয়। এই ম্যাচ ইডেন গার্ডেনে হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে কয়েক হাজার দর্শক চলে আসত ম্যাচ দেখতে। এমনিতেও টেস্টে যেখানে দর্শক হয় না এখন, তখন বোর্ড তার আবর্তন নীতির ব্যতিক্রম করতেই পারত দুই বাংলার সমর্থকদের কথা ভেবে।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকেও (বিসিবি) বিসিসিআই-তোষণ থেকে সরে আসার পরামর্শ দিয়েছেন বোরিয়া মজুমদার, ‘বাংলাদেশ বোর্ডকেও প্রশ্ন করতে হবে। বিসিসি কেন এমন সূচিতে রাজি হয়ে গেল। তারা তো আর ভারতের ওপর নির্ভরশীল নয় আইসিসি পর্যায়ে। তাদের দলও এখন বেশ মানসম্পন্ন। বরং সত্যিটা হলো ভারতীয় বোর্ড এখন ব্যাকফুটে আইসিসি তিন মোড়ল নীতির অবলোপন যখন হচ্ছে। বিসিবির জন্য এটাই ছিল নিজেদের জোর দেখানোর সুযোগ।’
বোরিয়া এই বলে তাঁর লেখার শেষ টেনেছেন, ‘একটা মাত্র টেস্ট খেলার আসলে কোনো মানে হয় না। আবারও কবে ভারত বাংলাদেশকে খেলতে ডাকবে, সে-ই বা কে জানে!’

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top