বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ছোট্ট শিশু সুবর্ণ আইজ্যাক বারী। মাত্র চার বছর বয়সেই ‘খুদে আইনস্টাইন’ হিসেবে পরিচিতি পায়। বাবা-মায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছে এই খুদে আইনস্টাইন। শিশুটির বৃদ্ধিমত্তা আর কর্মকাণ্ডে গোটা বিশ্বের মানুষের ভালোবাসা আর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। গেল ২ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা চিঠি লেখেন। চিঠির গল্পটি এখন সবার মুখে মুখে। হোয়াইট হাউস থেকে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা চিঠিতে লেখেন। শুধু তাই নয়, ওবামা সুবর্ণের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন বলেও জানান চিঠিতে। ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্টের চিঠির লেখাটি ছিল এই রকম। ‘প্রিয় সুবর্ণ, আশা করছি তুমি তোমার কঠোর পরিশ্রম এবং অর্জনের জন্য তুমি গর্ব অনুভব কর। তোমার মতো শিক্ষার্থী আমেরিকায় আরও দরকার, যারা স্কুলে কঠোর পরিশ্রম করার চেষ্টা করে, বড় স্বপ্ন দেখে এবং আমাদের সমাজের পরিবর্তন ঘটায়। আমাদের দেশ অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। কিন্তু আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হই তাহলে এসব মোকাবিলা করা কোনো ব্যাপারই নয়। তুমি তোমার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাও, আমি তোমার সঙ্গে আছি। তোমার কাছে আমি অনেক বড় কিছু প্রত্যাশা করি।’ বিখ্যাত হয়ে ওঠে শিশুটির করা প্রশ্ন। ‘ইউনিভার্স অর মাল্টিভার্স?’ অবাক হওয়ার মতো কথা! চমকে গিয়েছিলেন বাবা রাশীদুল বারী! ঘটনাটি ঘটেছিল একেবারে ছোট্ট বয়সে। নিউইয়র্কের হাসপাতালে জ্বরে কাতরানো সুবর্ণকে বাবা রাশীদুল বললেন, ‘আই লাভ ইউ মোর দ্যান এনিথিং ইন দ্য ইউনিভার্স’। তারই প্রতি উত্তরে কথাটি বলেছিল। মাত্র দেড় বছর বয়সে বাবার মুখে রসায়নের গল্প শুনেছিল। বাবা রাশীদও তখন ভাবেননি যে, ছেলে এসব মনে রেখে বিজ্ঞান সম্পর্কে এতো কিছু বলতে পাবে। তখনো তিনি জানতেন না এই সুবর্ণ ৩ বছর বয়সে অঙ্ক, পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়নে দক্ষতা দেখিয়ে সারা পৃথিবীতে সাড়া জাগাবে। সেই সুবর্ণ ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হৈচৈ ফেলে দিয়েছে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সুবর্ণের মেধা বিস্ময় সৃষ্টি করেছে সর্বত্র। যে এখনো স্কুলেই যায়নি, সে কীভাবে জ্যামিতি, বীজগণিতসহ রসায়নের জটিল বিষয়ের সহজ সমাধান দিচ্ছে। একদিন সুবর্ণর মা, ওকে অঙ্ক শেখাচ্ছিল। হঠাৎ সুবর্ণ বলল, ‘ইফ ওয়ান প্লাস ওয়ান ইকুয়াল টু টু, দ্যান টু প্লাস টু ইকুয়াল টু ফোর এবং এন+এন ইকুয়াল টু টুএন, তাই না?’ বাবা রাশীদুল পাশের রুম থেকে ছেলের কথা শুনে শুধু অবাকই হননি, ছেলের এমন প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে তাকে অ্যাডভান্সড ম্যাথ অ্যান্ড সায়েন্স শেখানো শুরু করেন। মাত্র দুই বছর বয়সে রসায়নের পিরিয়ডিক টেবিল মুখস্থ করে ফেলে সুবর্ণ। অবিশ্বাস্য এই কথাটি সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের ছাত্র-শিক্ষকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। মেডগার এভার্স কলেজের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড পোজম্যান শিশুটির সঙ্গে কথা বলেন এবং ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগ একটি অনুষ্ঠানেও ডাক পায় শিশুটি। সুবর্ণর জন্ম ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল। এখনো স্কুলে ভর্তি হয়নি কিন্তু ছোট্ট এই বয়স থেকে সুবর্ণ তার বাবার ল্যাবরেটরিতে যাচ্ছে এবং অঙ্কশাস্ত্র ছাড়াও রসায়নের বিভিন্ন বিভাগ সম্পর্কে ধারণা নিচ্ছে। হয়তো সত্যি সত্যিই বিস্ময় এই বালকটি ভবিষ্যতে স্যার আইনস্টাইন হয়ে উঠবে।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ছোট্ট শিশু সুবর্ণ আইজ্যাক বারী কে বারাক ওবামার চিঠি
Share!