নবম উইকেটে ক্রিস উকস ও আদিল রশিদের ৯৯ রানের অনবদ্য জুটির সুবাদে ২৪ রানের লিড নিয়ে থামলো ইংল্যান্ড। লো-স্কোরিং প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ২২০ রানের জবাবে ২৪৪ রানে অলআউট সফরকারীরা। একাই ইংলিশদের ছয় ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠান মেহেদি হাসান মিরাজ।উকস-রুট জুটির আগে একমাত্র আশার প্রদীপ হয়ে থাকা জো রুট ৫৬ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। তার বিদায়ে অষ্টম উইকেটের পতন ঘটে। ৪৪তম ওভারে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে রুটকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন তাইজুল ইসলাম।চট্টগ্রাম টেস্টের পর ঢাকা টেস্টেও পাঁচ উইকেটের অভিজাত ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ৪১তম ওভারে জাফর আনসারিকে (১৩) শুভাগত হোমের ক্যাচ বানিয়ে এমন কীর্তি স্পর্শ করেন ১৯ বছর বয়সী এ উঠতি অফস্পিন অলরাউন্ডার।ষষ্ঠ উইকেটে জনি বেয়ারস্টোর সঙ্গে ৪৫ রানের পার্টনারশিপ গড়েন রুট। ৩৩তম ওভারের মাথায় দলীয় ১১৪ রানে মিরাজের চতুর্থ শিকারের বলটিতে পরিষ্কার এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন বেয়ারস্টো (২৪)।ইনিংসের ৫৬তম ওভারে মঈনকে (১০) ক্লিন বোল্ড করে দিনের প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন আগের দিনের দুই উইকেটশিকারি মিরাজ। পরের ওভারেই বেন স্টোকসকে (০) মুমিনুল হকের ক্যাচে পরিণত করে উইকেটের খাতায় নাম লেখান তাইজুল। দলীয় ৬৯ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে ইংলিশ শিবির।বৃষ্টির কারণে গতকাল (২৮ অক্টোবর) পুরোদিন খেলা সম্ভব হয়নি। ১২.৩ ওভার শেষে তিন উইকেটে পঞ্চাশ রান নিয়ে মাঠে ছাড়ে ইংলিশরা। অপরাজিত থাকেন জো রুট ও মঈন আলী।শুক্রবার স্বাগতিকদের ২২০ রানের জবাবে শুরুতেই বেন ডাকেটের (৭) উইকেট হারায় ইংলিশরা। ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারেই উইকেট উদযাপনে মাতেন সাকিব অাল হাসন। পঞ্চম ওভারে ইংলিশ দলপতি অ্যালিস্টার কুককে এলবিডব্লুর ফাঁদে পেলেন চট্টগ্রাম টেস্টে অভিষিক্ত মেহেদী হাসান মিরাজ।পরে গ্যারি ব্যালান্সকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন ১৯ বছর বয়সী এ উঠতি অফস্পিন অলরাউন্ডার। ডাকেটের পর ব্যালান্সকেও গ্লাভসবন্দি করেন মুশফিকুর রহিম। দলীয় ৪২ রানের মাথায় তিন উইকেট হারায় তারা।এর আগে মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম দিনের প্রথম সেশনে একক আধিপত্য দেখায় টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ। কিন্তু এরপর ক্রমেই যেন উইকেটের আচরণ বদলায়! দলীয় ১ রানে ইমরুল কায়েসকে (১) হারালেও মুমিনুল হককে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ১৭০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে শক্ত ভিত গড়ে দেন সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল।তামিমের দুর্দান্ত ইনিংস সত্ত্বেও বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ২২০ রানে। শুরুটা বাঘের মতো হলেও মিডঅর্ডারের ব্যর্থতায় বড় সংগ্রহ গড়া হয়নি। চট্টগ্রাম টেস্টের উইকেট যেন ফিরে আসে মিরপুরে। বল মন্থর হয়ে ব্যাটে আসার সঙ্গে টার্নও বাড়তে থাকে। এর পুরো সুবিধাই কাজে লাগায় বোলাররা। একদিনে দু’দলের ১৩ উইকেটের পতন তো তারই প্রমাণ।শেষ ৪৯ রানে ৯ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শেষ ৩০ রানে আট উইকেট। ভাবা যায়! রীতিমতো ধসই নামের টাইগারদের ব্যাটিং লাইনআপে। ব্যাটিংয়ে হতাশার দিনে উজ্জ্বল ছিলেন তামিম ও মুমিনুল। অন্যদিকে, ইংলিশদের হয়ে একাই পাঁচ উইকেট দখল করেন অফস্পিন অলরাউন্ডার মঈন আলী।ক্যারিয়ারের অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম (১০৪)। ৪২তম ওভারে মঈনের বলে এলবিডব্লুর শিকার হন দেশসেরা এ ওপেনার। মঈনের বলেই বোল্ড হয়ে ৬৬ রান করে আউট হন মুমিনুল। আর কেউই উইকেটে থিতু হতে পারেননি।বাজে শট খেলে একে একে সাজঘরে ফেরেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহরা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৩, সাকিব অাল হাসান ১০, অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ৪, সাব্বির রহমান ০, শুভাগত হোম ৬, কামরুল ইসলাম রাব্বি ০ ও মেহেদি হাসান মিরাজের ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১। ৫ রানে অপরাজিত থাকেন তাইজুল ইসলাম।মঈনের সঙ্গে বল হাতে দুর্দান্ত ছিলেন ইমরুলকে ফিরিয়ে উইকেটের সূচনা করা ক্রিস উকস ও বেন স্টোকস। উকস তিনটি ও বাকি দুই উইকেট নেন স্টোকস।সিরিজ বাঁচাতে এ ম্যাচে মুশফিকদের জয়ের বিকল্প নেই। দুই ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে সফরকারীরা। চট্টগ্রামে জয়ের কাছাকাছি গিয়েও শেষদিকের ছন্দপতনে ২২ রানের পরাজয় সঙ্গী হয়। মিরপুরে কী সেই আক্ষেপ মেটাতে পারবে টিম বাংলাদেশ?
বাংলাদেশের ২২০ রানের জবাবে ২৪৪ রানে অলআউট সফরকারীরা
Share!