আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের মানুষকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, শয়তান মানুষের প্রকাশ্য দুশমন। কারণ সে মানুষকে সব সময় শুধুমাত্র মন্দ এবং অশ্লীল কাজের হুকুম করে থাকে। মানুষকে আল্লাহ বিধি-বিধান পালন থেকে বিরত থাকতে কুমন্ত্রণা দিয়ে থাকে।ইবলিস শয়তান মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য কুমন্ত্রণা দেয় এবং প্ররোচনা দেয়ার কাজে শয়তান তার বিশাল সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করেন। এ সৈন্যবাহিনী মানুষকে যে কুমন্ত্রণা দিলে ইবলিশ আনন্দিত হয়, সে ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে বর্ণনা দিয়েছেন। যা তুলে ধরা হলো-হজরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘ইবলিস শয়তান তার আসন পানিতে স্থাপন করে এবং সেখান থেকে তার কর্মীদেরকে প্রেরণ করে মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য। তার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শয়তানরাও পৃথিবীতে বড় বড় গোমরাহী সৃষ্টি করে থাকে।অতঃপর তারা যখন মানুষকে গোমরাহ করে ফিরে আসে তখন প্রত্যেকেই নিজ নিজ কার্য বিবরণী পেশ করতে থাকে। একজন বলে- ‘আমি আজ (মানুষকে দিয়ে) অমুক খারাজ করিয়ে এসেছি। ইবলিশ তখন বলে, ‘এটা তোমার তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য কাজ হয়নি।’ এভাবে অন্যান্য শয়তান তাদের কার্য বিবরণী গর্বের সঙ্গে পেশ করে।অবশেষে এক শয়তান এসে বলে যে, আমি আজ এক মহৎ কাজ করে এসেছি- ‘এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ সৃষ্টি করে এসেছি। ইবলিস এ বিবরণ শুনে অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে তাকে কাছে টেনে নেয় এবং বলতে থাকে, ‘তুই আজ সত্যি একটি বড় কাজ করে এসেছিস।’শয়তানের প্ররোচনা থেকে মুক্ত থাকতে…
হজরত ইবনে মাসউদ রদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন ‘মানুষের মধ্যে শয়তানেরও প্রভাব রয়েছে আবার ফেরেশতার প্রভাবও রয়েছে।শয়তানের প্রভাব হলো- ‘মন্দ কাজের অঙ্গীকার করে থাকে এবং সত্যের প্রতি মিথ্যা আরোপ করে থাকে।আর ফেরেশতার প্রভাব হলো- সে ভাল কাজের অঙ্গীকর করে থাকে এবং সত্যকে সত্য হিসাবে স্বীকার করে থাকে।সুতরাং যারা ফেরেশতার ধারণা নিজের অন্তরে পেয়ে থাকে তারা যেন মনে করে, এই ধারণা আল্লাহর তরফ থেকে এসেছে। সে যেন আল্লাহর প্রশংসা বর্ণনা করে থাকে।আর যখন শয়তানি প্ররোচনা অন্তরে জাগরিত হয় তখন যেন সে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করতে থাকে।পরিশেষে….উল্লেখিত হাদিস দুটি মুসলিম উম্মাহর জন্য সতর্কবার্তা এবং সত্যের ওপর অবিচল-অটল থাকার গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ। ইবলিস শয়তানের কুমন্ত্রণা ও প্ররোচনা থেকে মুক্ত থাকতে বিশ্বনবির কার্যকরী টনিক হলো- আল্লাহর শুকরিয়া যে, শয়তানের (কোনো কাজের) হুকুম করা, (তা) ওয়াসওয়াসা (প্ররোচনা) পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রয়েছে।আল্লাহ তআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কার্যকলাপ থেকে হিফাজত করুন। ইবলিশের আনন্দিত হওয়ার মতো কার্যাবলী থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
শয়তান মানুষের প্রকাশ্য দুশমন
Share!