নামের পাশে ২৪৯ বলে ১১৬ রান। তবু পৃথিবীর সব হতাশা যেন ভর করেছিল তার মনে। শরীরটা এতটাই ভারী হয়ে উঠলো যে চলতে চাইছিল না পা জোড়া। উইকেট থেকে মাঠ পার হতে তাই লাগলো অনেকটা সময়। সেঞ্চুরি করে আউট হয়েছেন, এর পরও একবারের জন্য মাথাটা উঠলো না ড্যারেন ব্র্যাভোর।এমন লড়াকু ইনিংস খেলেও যে আসল কাজটা করে আসতে পারলেন না ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ব্যাটসম্যান। না জিতলেও, অন্তত ড্র করার স্বপ্নটা তার আউটের সঙ্গেই ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল ক্যারিবিয়ানদের। উইকেটে দাঁত কামড়ে দাঁড়িয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত পারেননি জেসন হোল্ডার। দিবা-রাত্রির টেস্টের শেষ দিনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পাকিস্তান তাই দুবাই টেস্ট জিতে নিয়েছে ৫৬ রানে। ৩৪৬ রানের লক্ষ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট হয়েছে ২৮৯ রানে। তাতে নিজেদের ইতিহাসের ৪০০তম টেস্টটা জয় দিয়েই উদযাপন করলো মিসবাহ-উল-হকরা।দেবেন্দ্র বিশুর ঘূর্ণিতে (৪৯ রানে ৮ উইকেট) দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তান মাত্র ১২৩ রানে গুটিয়ে গেলেও লক্ষ্যটা সহজ ছিল না ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য। চতুর্থ দিনে ৯৫ রানে ২ উইকেট হারানো সফরকারীরা শেষ দিনের সকালে মারলন স্যামুয়েলসকে (৪) হারালে জয়ের আশা আরও উজ্জ্বল হয় পাকিস্তানের। কিন্তু ব্র্যাভো একপ্রান্ত আগলে রেখে সাবলীলভাবে খেলে যাওয়ায় সংশয়ের মেঘ জমে পাকিস্তানি ভক্তদের মনে। জার্মেইন ব্ল্যাকউড (১৫) ও রোস্টন চেসের (৩৫) কাছ থেকে সঙ্গটা ভালোই পেয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। যদিও চেস আউট হওয়ার পর পরই শেন ডরউইচ (০) ফিরলে চাপে পড়ে ক্যারিবিয়ানরা। কিন্তু ব্র্যাভোর সঙ্গে অধিনায়ক জেসন হোল্ডার দাঁড়িয়ে গেলে আবার চিন্তার ভাঁজ পড়ে পাকিস্তান খেলোয়াড়দের কপালে। এর মধ্যে ব্র্যাভো পূরণ করেন টেস্ট ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি। ঠাণ্ডা মাথায় ঠিক পথেই এগোচ্ছিলেন তারা, কিন্তু ইয়াসির শাহর বলে বড় ভুল করে বসলেন ব্রাভো। উঠিয়ে খেলতে গিয়ে ইয়াসিরের রিটার্ন ক্যাচে ব্র্যাভো ফেরত যান প্যাভিলিয়নে ৪০৬ মিনিটের লড়াকু ইনিংস খেলে।তার বিদায়েই আসলে এক রকম নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানের জয়। জেসন হোল্ডারের ১২৭ বলে হার নামা ৪০ রানের ইনিংসটা তাই বাঁচাতে পারেনি ক্যারিবিয়ানদের হার। মোহাম্মদ আমির ৬৩ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। আর ইয়াসির ও মোহাম্মদ নওয়াজ দুজনই নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। ম্যাচসেরা হয়েছেন প্রথম ইনিংসে ট্রিপল সেঞ্চুরি করা আজহার আলী।
নিজেদের ইতিহাসের ৪০০তম টেস্টটা জয় দিয়েই উদযাপন-পাকিস্তান
Share!