হজ্ব পালনকারীদের ইসলাম নির্দেশিত বেশকিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। মীকাতের পূর্বে বা মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধার পর হাজীদের সর্বাবস্থায় বার বার তালবিয়া বা লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা পাঠ করতে হয়। হানাফী মাযহাব মতে, ইহরাম অবস্থায় তালবীয়া পাঠ করা ওয়াজিব। না পড়লে ইহরাম হবে না। ইহরাম বাঁধার পর হজ্বের প্রধান কাজ হলো বায়তুল্লাহ শরীফ বা কাবা শরীফ তাওয়াফ করা।তাওয়াফ শব্দের অর্থ প্রদক্ষিণ করা। এক বিশেষ নিয়মে বায়তুল্লাহ শরীফ প্রদক্ষিণ করার নামই তাওয়াফ। হাজীরা হেরেম শরীফ পৌঁছার সাথে সাথেই প্রথম দফা তাওয়াফ করেন। এই তাওয়াফ ফরজ নয়, সুন্নাত। ফরজ তাওয়াফ করতে হয় জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখে মীনায় অবস্থানকালে। সেখান থেকে এসে ১০, ১১, বা ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্বে তাওয়াফ করাকে তাওয়াফে যিয়ারত বলা হয়। এছাড়া আরো এক দফা বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করতে হয়। যাকে তাওয়াফে সদর বা তাওয়াফে বিদা বলা হয়। এই তাওয়াফ হাজীরা বিদায়কালে করে থাকেন। মক্কার বাইরের লোকদের জন্য এই তাওয়াফ করা ওয়াজিব। যারা ওমরার উদ্দেশ্যে মক্কায় প্রবেশ করেন তাদের জন্য তাওয়াফে কুদুম ওয়াজিব। তাওয়াফকালে সেখানে অবস্থিত হাজরে আসওয়াদ (কালো পাথর) নামে একটি পাথর রয়েছে। সেটাকে চুম্বন করতে হয়। তবে চুম্বনের সময় কাউকে কষ্ট দেয়া যাবে না। চুম্বন না করতে পারলে হাত পাথরের দিকে উঁচু করে হাতে চুম্বন করলেই হবে। তাওয়াফ বা হাজরে আসওয়াদ চুম্বনের পর ‘মাকামে ইব্রাহীম’ এর পেছনে স্থানে দু’ রাকাত নামায পড়তে হয়। মাকামে ইব্রাহীম সেই পাথর খন্ডের নাম, যার ওপর দাঁড়িয়ে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কাবা শরীফ নির্মাণ করেছিলেন। তারপর হাজীদেরকে সাফা মারওয়া নামক পাহাড় দু’টিতে আরোহণ করতে হয়। সেখানে উভয় পাহাড়ের মাঝখানে দৌড়াতে হয়, একে সায়ী বলা হয়। এভাবে একজন হাজী মহান আল্লাহর সাথে তার সম্পর্ককে ঘনিষ্ঠ করে ৯ তারিখ আরাফার ময়দানে অবস্থানের অপেক্ষায় থাকে। সেটা বিশ্ব মুসলিমের সর্ববৃহৎ সম্মেলন। সেই সম্মেলনের দিনকেই হজ্বের দিন বলা হয়।
“লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা”
Share!