প্রচণ্ড গরমে শরীর ঘামবে—এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু কেউ কেউ বলেন, তাঁদের ঘামটা নাকি অস্বাভাবিক। তাপমাত্রা যাই হোক না কেন, অন্যদের তুলনায় তাঁরা ঘামেন অনেক বেশি। কারও আবার পুরো শরীর নয়, কেবল হাত-পা ঘামে। অতিরিক্ত ঘেমেনেয়ে সারা হওয়াটা কি কোনো রোগের মধ্যে পড়ে? চিকিৎসাবিজ্ঞান এ ধরনের পরিস্থিতিকে বলে হাইপারহাইড্রোসিস। এমনিতে বেশি ঘামার প্রবণতা, যার তেমন কোনো কারণ নেই, কিছুটা বংশগত—তাকে বলে প্রাইমারি হাইপারহাইড্রোসিস। কিন্তু কিছু কিছু সমস্যার কারণে শরীর তুলনামূলক বেশি ঘামে।শারীরিক পরিশ্রমের পর বা জ্বর হলে স্বাভাবিক ঘাম হবে। টেনশন বা মানসিক চাপেও মানুষ ঘামতে শুরু করে। উদ্বেগজনিত মানসিক রোগে হাত-পায়ের তালু এত ঘামে যে কেউ কেউ কাগজে কিছু লিখতেই পারেন না। দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিসে স্নায়ুজনিত জটিলতায় ঘাম হতে পারে বেশি, অনেক সময় দেখা যায় খাওয়ার পরই এটা বেশি হচ্ছে। আবার রক্তে শর্করা হঠাৎ কমে গেলেও ঘাম হয়। বুকে চাপ, অস্বস্তি—তার সঙ্গে ঘাম হওয়া কিন্তু হৃদ্রোগের লক্ষণ হতে পারে। থাইরয়েডের অতিকার্যকারিতায় রোগী ওজন হারায়, বুক ধড়ফড় করে এবং অতিরিক্ত ঘামে। নারীদের মেনোপজের পর হট ফ্লাশ হলে খুব অস্বস্তিকর ঘাম হতে থাকে। কিছু ওষুধও অতিরিক্ত ঘামের কারণ হতে পারে। যক্ষ্মা রোগে এবং কিছু ক্যানসার (যেমন: লসিকাগ্রন্থির লিমফোমা) হলে ঘাম বেশি হয়, বিশেষ করে রাতে।এমনিতে অন্য কোনো উপসর্গ বা কারণ না পেলে বেশি বেশি ঘাম নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। তবে ঘামের সঙ্গে শরীর প্রচুর লবণ-পানি হারায়। তাই বেশি ঘামলে শরীরে পানিশূন্যতা হতে পারে। বারবার পানি খেয়ে সেই চাহিদা পূরণ করতে হয়। শিশুরা অনেক সময় একটু বেশি ঘামে, আর তা থেকে শরীর ভিজে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। তাই ভেজা কাপড় বদলে শরীর শুকনো তোয়ালে দিয়ে মুছে দিতে হবে। তবে ঘামের পাশাপাশি থেকে থেকে জ্বর, ওজন হ্রাস, বুকে ব্যথা, বুক ধড়ফড় ইত্যাদি উপসর্গ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বেশি ঘামার প্রবণতা
Share!