গতবারের মতো এবারের মৌসুমেও ট্রেবল জয়ের হাতছানি ছিল বার্সেলোনার সামনে। এপ্রিলের শুরুতেও কাতালানরা ছিল সঠিক পথে। একের পর এক জয় দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল দুর্দান্ত গতিতে। গড়েছিল টানা ৩৯ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড। কিন্তু ২ থেকে ১৭ এপ্রিল—এই ১৬ দিনেই ওলটপালট হয়ে গেছে বার্সেলোনা সমর্থকদের হিসাব-নিকাশ। ট্রেবল জয় দূরের কথা, বার্সা শেষ পর্যন্ত লা লিগার শিরোপাটাও জিততে পারবে কি না, তা নিয়েই দেখা দিয়েছে ঘোর সংশয়।এই ১৬ দিনের মধ্যে বার্সেলোনা বিদায় নিয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে। আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে প্রথম লেগটা ২-১ গোলে জিততে পারলেও দ্বিতীয় লেগে ২-০ গোলে হেরে শেষ হয়েছে শিরোপা জয়ের আশা। দুরবস্থা চলছে লা লিগাতেও। এপ্রিলের শুরুতে যেখানে বার্সেলোনা এগিয়ে ছিল ৯ পয়েন্টের ব্যবধানে, সেখানে এখন তাদের ছুঁয়েই ফেলেছে আতলেতিকো। ৩৩ ম্যাচ শেষে দুই দলেরই পয়েন্ট ৭৬। রিয়াল মাদ্রিদ পিছিয়ে আছে মাত্র এক পয়েন্টের ব্যবধানে।২ থেকে ১৭ এপ্রিলের মধ্যে লা লিগায় বার্সেলোনা হেরেছে টানা তিনটি ম্যাচ। ২০০৩ সালের পর এবারই প্রথমবারের মতো টানা তিনটি ম্যাচে হারের স্বাদ পেতে হয়েছে কাতালানদের। বুধবার লা লিগার পরবর্তী ম্যাচে দেপোর্তিভো লা করুনার বিপক্ষে জিততে না পারলে বার্সা পড়ে যাবে আরো দুরবস্থার মধ্যে। পুরো মৌসুমেই দারুণ খেলার পর শেষ পর্যায়ে এসে কেন এমন অবস্থা হলো বার্সার?কারণ খুঁজতে গিয়ে অনেকেই বলছেন, একের পর এক ম্যাচ খেলে যাওয়ার কারণে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন বার্সার খেলোয়াড়রা। বিশেষত, আক্রমণভাগের তিন তারকা লিওনেল মেসি, নেইমার ও লুইস সুয়ারেজ। তিনজনকেই বার্সার পাশাপাশি অনেক ম্যাচ খেলতে হয়েছে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে। গত এক বছরে মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ সব মিলিয়ে খেলেছেন ১৬,০৫৮ মিনিট। ইউরোপের সেরা ক্লাবগুলোর আক্রমণভাগের অন্য কোনো খেলোয়াড়কে এত সময় খেলতে হয়নি। গত মার্চে তিনজনই গিয়েছিলেন জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে। সেখানে তাঁরা খেলেছেন দুটি করে ম্যাচ। সেখান থেকে বার্সেলোনায় ফিরে আসার পরেই আর সেভাবে জ্বলে উঠতে পারছেন না মেসি-নেইমার-সুয়ারেজরা। ভ্রমণক্লান্তি আর টানা খেলে যাওয়ার ধকলই কি সামলে উঠতে পারছেন না তাঁরা?উত্তরটা নিশ্চিতভাবে জানার উপায় নেই। তবে মৌসুমের বাকি সময়টা তাঁরা জ্বলে উঠতে পারবেন, এমনটাই আশা করছেন বার্সেলোনার সমর্থকরা। এখনো দুটি শিরোপা জিতে মৌসুম শেষ করার সুযোগ আছে বার্সার সামনে। তবে সে জন্য লা লিগার বাকি পাঁচটি ম্যাচে জিততে হবে লুইস এনরিকের শিষ্যদের। আর ২১ মে কোপা দেল রের ফাইনালে জিততে হবে সেভিয়ার বিপক্ষে।
আকাশ থেকে পাতালে বার্সেলোনা!
Share!