Wednesday , 25 December 2024
সংবাদ শিরোনাম
রুশ কার্গো জাহাজ বিস্ফোরণের পর ভূমধ্যসাগরে ডুবল

রুশ কার্গো জাহাজ বিস্ফোরণের পর ভূমধ্যসাগরে ডুবল

ভূমধ্যসাগরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় বিস্ফোরণের পর রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একটি কার্গো জাহাজ ডুবে গেছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার টেলিগ্রামে এ তথ্য জানিয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্রাইসিস ইউনিট জানিয়েছে, ‘উরসা মেজর’ নামের জাহাজটি ইঞ্জিন রুমে বিস্ফোরণের ফলে ডুবে যায়। ১৬ জন রুশ ক্রুর মধ্যে ১৪ জনকে উদ্ধার করে স্পেনের কার্তাখেনা বন্দরে নেওয়া হয়েছে এবং দুজন নিখোঁজ রয়েছেন।

স্পেনের সামুদ্রিক উদ্ধার সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার সকালে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে জাহাজটি দক্ষিণ-পূর্ব স্পেনের উপকূলে বিপদ সংকেত পাঠায়। জাহাজটি হেলে পড়ার খবর জানানো হয় এবং একটি লাইফবোট নামানো হয়েছিল। স্পেন একটি হেলিকপ্টার ও উদ্ধারকারী নৌকা পাঠিয়ে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের বন্দরে নিয়ে গেলে রেড ক্রস তাদের সহায়তা করে। পরে একটি রুশ যুদ্ধজাহাজ উদ্ধার অভিযানের দায়িত্ব নেয়।

কারণ জাহাজটি স্পেন ও আলজেরিয়ার মধ্যবর্তী জলসীমায় ছিল। এরপর রাতের মধ্যে ‘উরসা মেজর’ ডুবে যায়।স্পেনের উদ্ধার সংস্থা জানিয়েছে, বেঁচে থাকা ক্রুদের মতে, জাহাজটি খালি কন্টেইনার ও ডেকে দুটি ক্রেন বহন করছিল।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাহাজটি রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন ওবোরনলজিস্টিকার একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করত।

প্রতিষ্ঠানটি বেসামরিক পরিবহন ও লজিস্টিকস সেবাও দিয়ে থাকে। ওবোরনলজিস্টিকার ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত মানচিত্রে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি দক্ষিণ রাশিয়ার নভোরোসিস্ক থেকে সিরিয়ার তারতুসে অবস্থিত রাশিয়ার নৌ ঘাঁটিসহ বিভিন্ন রুট পরিচালনা করে।এদিকে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সিরিয়ায় রুশ ঘাঁটিগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা জিইউআর সোমবার দাবি করেছে, রাশিয়া সিরিয়ার তারতুস বন্দর থেকে লিবিয়ায় অস্ত্র ও সরঞ্জাম সরবরাহ শুরু করেছে।

মেরিনট্র্যাফিক ওয়েবসাইট অনুসারে, ১২৪.৭ মিটার দীর্ঘ সাধারণ কার্গো জাহাজ ‘উরসা মেজর’ রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে দূরপ্রাচ্যে ভ্লাদিভোস্টকের দিকে যাচ্ছিল।

এ ছাড়া গত সপ্তাহে ওবোরনলজিস্টিকা জাহাজটির ছবিসহ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, জাহাজটি একটি বিশেষ বড় ও ভারী পণ্য বহন করবে। এর মধ্যে ছিল ক্রেন, যার প্রতিটির ওজন ৩৮০ টন এবং আইসব্রেকারের হ্যাচ কভার, যার প্রতিটির ওজন ৪৫ টন, যা রাশিয়ার সুদূর পূর্বের শহর ভ্লাদিভোস্টকে পৌঁছে দেওয়া হবে।বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছিল, এটি আর্কটিকের উত্তর সমুদ্রপথ উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টার অংশ ছিল। এমন বিশাল পণ্য পরিবহনের জন্য সমুদ্রপথই সেরা এবং প্রতিষ্ঠানটির এ ধরনের কাজে ‘অগাধ অভিজ্ঞতা’ রয়েছে। অন্যদিকে তদন্তমূলক সংবাদমাধ্যম এজেন্টসভো জানিয়েছে, এই হ্যাচ কভারগুলো নতুন পরমাণু আইসব্রেকার ‘লিডার’-এর জন্য, যা আর্কটিকের উত্তর সমুদ্রপথে পুরু বরফ ভাঙার জন্য তৈরি করা হয়েছে।

এ দুর্ঘটনার আগে গত ১৬ ডিসেম্বর জ্বালানি তেলবাহী একটি রুশ ট্যাংকার মস্কো অধিকৃত ক্রিমিয়া ও দক্ষিণ রাশিয়ার মধ্যে একটি প্রণালিতে আংশিকভাবে ডুবে যায়, যা বড় ধরনের তেল ছড়িয়ে পড়ার কারণ হয়েছিল।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top