Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম
বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে পূর্ণ সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য

বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে পূর্ণ সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য

তপু শাহিনঃ   যুক্তরাজ্যের ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক মন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেছেন, ‘তার সরকার বাংলাদেশ থেকে পাচার করা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় ঢাকাকে পূর্ণ সহায়তা দেবে।’

আজ রবিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টাকে ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, ‘আপনাকে জানানো গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি আমাদের সমর্থন পেয়েছেন।’

ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার প্রায় ষোল বছরের শাসনামলে বিদেশে পাচার হওয়া কয়েক বিলিয়ন ডলার ফেরত আনার জন্য ঢাকার প্রচেষ্টায় যুক্তরাজ্য তার সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, অলিগার্ক ও আমলাদের পাচার করা অর্থ ফেরত আনা অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’

তিনি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে বছরে ১২ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিদেশে পাচার হয়েছে।’

বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে তাঁর সরকারের সংস্কার উদ্যোগের বর্ণনা দেন।

তিনি বলেন, ‘দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা এবং পূর্ববর্তী শাসনামলে চর্চা করা ব্যাপক ভোট কারচুপি থেকে বিরত থাকা এই সংস্কারের লক্ষ্য।

পশ্চিমা দেশগুলো সরকারের সংস্কার উদ্যোগগুলোকে সমর্থন করে উল্লেখ করে ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, ‘ব্রিটেন নির্বাচনী, বিচার বিভাগীয় ও সাংবিধানিক সংস্কারের মূল দিকগুলোতে প্রাণবন্ত বিতর্ক দেখতে চায়। বিতর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

মন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা শরণার্থী, স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সেবা ও সহায়তা প্রদানের জন্য যুক্তরাজ্য ১০.৩ মিলিয়ন পাউন্ড অনুদান সহায়তা ঘোষণা করেছে।

ড. ইউনূস মিয়ানমারের সহিংসতা-জর্জরিত রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য একটি ‘জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নিরাপদ অঞ্চল’ প্রতিষ্ঠায় তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন; যাতে তাদের সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে না হয় এবং দাতব্য সংস্থা এবং সাহায্য গোষ্ঠীগুলো নির্বিঘ্নে বাস্তুচ্যুত মানুষের দোরগোড়ায় খাদ্য ও সহায়তা নিতে পারে।

বৈঠকে তারা ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা, সংখ্যালঘুদের অধিকার, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক এবং নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ৪০ মেগাওয়াট জ্বালানি চুক্তি নিয়েও আলোচনা করেন।

ড. ইউনূস বলেন, ‘তাঁর সরকার জলবিদ্যুৎ সমৃদ্ধ নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আনার জন্য দক্ষিণ এশিয়ার বিদ্যুৎ গ্রিড তৈরিকে পুরোপুরি সমর্থন করেছে।’

তিনি বলেন, ‘হিমালয়ের পাদদেশের দুই দেশ থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি আমদানি করতে পারলে বাংলাদেশ জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পারে।  এ লক্ষ্যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

বৈঠকে ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে গুরুতর আহত ছাত্র ও অন্যান্য বিক্ষোভকারীদের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের একটি মেডিক্যাল টিম চলতি মাসে দেশে এসেছে।

তারা দিনে তিনটি করে অস্ত্রোপচার করছেন।’
Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top