ফিলিপিন্সের ব্যবসায়ী কিম ওং বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনার মূল হোতা বলে জানিয়েছেন দেশটির সিনেটর সার্জিও ওসমেনা। তিনি আরো বলেন, মায়া সান্তোস দেগুইতোকে একা দোষী মনে করা হলেও এ অর্থ পাচারের সঙ্গে রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জড়িত। ফিলিপিন্সে রেডিওতে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। এদিকে, সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গ বলছে, রিজার্ভের অর্থ চুরির অন্তত ২ সপ্তাহ আগে গোপনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কম্পিউটার সিস্টেমে ঢুকেছে হ্যাকাররা।রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের মাকাতি শহরের জুপিটার ব্রাঞ্চে কিম ওংয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে ৫ নামে ৫টি ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিলো, যে অ্যাকাউন্টগুলো দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পাচার হয়। এই ব্যবসায়ীই মায়াকে ফিলরেমের মাধ্যমে ডলার পেসোতে রূপান্তরের পরামর্শ দেন। ফিলিপিন্সের সিনেটে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর শুনানিতে উঠে এসেছে এসব তথ্য। সিনেটের ব্লু রিবন কমিটি বলছে, অর্থ পাচারের পুরো ঘটনাটির সঙ্গে কিম ওং জড়িত এবং কমিটির ধারণা এ ঘটনার মূল হোতাও তিনি। এ বিষয়ে তদন্তে কিম ওংকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিনেটে ডাকা হবে বলেও জানান সিনেটর।সার্জিও ওসমেনা বলেন, ‘মায়ার বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, ঘটনার মূল হোতা কিম ওং। আমরা সিনেটে ডেকে তাকে শিগগিরিই জিজ্ঞাসাবাদ করবো। তবে এটুকু বোঝা যাচ্ছে, উনি গভীর জলের মাছ।’অ্যাকাউন্ট খোলার আগে অ্যাকাউন্ট বিষয়ক যাবতীয় সব তথ্য মায়াকে কিম দিয়েছিলেন বলেও জানান সিনেটর। কিন্তু যে ৪টি অ্যাকাউন্ট দিয়ে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পাচার হয়েছে, ব্লু -রিবন কমিটির তদন্তে উঠে এসেছে, এসব অ্যাকাউন্টগুলোই ভুয়া। অন্যদিকে, মায়ার সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে আরেক সিনেটর জানান, এ ঘটনায় আরসিবিসি’র আরো অন্তত ২ জন কর্মকর্তা জড়িত। একই অভিযোগ মায়া দেগুইতোর আইনজীবীরও।মায়া সান্তোস দেগুইতো’র আইনজীবী ফার্ডিনান্ড টোপাসিও বলেন, ‘তারা গুটি কয়েক ব্যাংক কর্মকর্তার ওপর এ ঘটনার দায় চাপিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। এটি অনেক বড় একটি ঘটনা। আমার মক্কেলের একার পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব নয়। তার সাথে কথা বলে আমি যতটুকু জানতে পেরেছি তা হলো, অবশ্যই আরও অনেক ব্যক্তি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।’মায়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ফিলিপিন্সের আরেক ব্যবসায়ী উইলিয়াম গো। এদিকে, আগামী ১২ এবং ১৯ এপ্রিল দেগুইতোসহ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন আরসিবিসি’র পাঁচজনকে প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ বিচার বিভাগে হাজির হতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে, ফায়ারআই এবং ওয়ার্ল্ড ইনফরমেটিকসের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সংবাদ মাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, অর্থ চুরির অন্তত ২ সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেমে ঢুকে বিভিন্ন বিষয়ে অনুসন্ধান চালায় হ্যাকাররা।এদিকে, আর্থিক লেনদেনে সংকেত পরিচালনাকারি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সুইফট কোডের দুই কর্মকর্তা ঢাকায় পৌঁছেই বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা।
কিম ওং রিজার্ভের অর্থ চুরির মূল হোতা’
Share!