রাজবাড়ীতে স্বামীকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যার দায়ে স্ত্রী শাহিদা বেগমকে (৫৮) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোছাম্মৎ জাকিয়া পারভীন এ রায় প্রদান করেন। আদালতে রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত সাহিদা বেগম (৫৭) আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আসামি শাহিদা বেগম বালিয়াকান্দি উপজেলার বংকুর গ্রামের আশরাফ সানার স্ত্রী। পিতাকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে আসামীর মেয়ে আফরোজা বেগম বাদী হয়ে ২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর মা সাহিদা বেগমের বিরুদ্ধে বালিয়াকান্দি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এজাহার ও আদালত সুত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানার উকাপুর গ্রামের আশরাফ সানার সঙ্গে বিয়ে হয় সাহিদা বেগমের। বিয়ের পর রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বংকুর গ্রামে জমি কিনে বাড়ী করে বসবাস শুরু করেন তারা। এখানে বাড়ি করার ১ বছর পর সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়াতে আরেকটি বিয়ে করে সেখানেই বসবাস করতে থাকেন এবং প্রথম স্ত্রী শাহিদা বেগমের সংসার খরচ দেওয়া বন্ধ করে দেন। তবে সে মাঝে মধ্যেই সাতক্ষীরা থেকে এসে টাকা চেয়ে না পেয়ে জমি বিক্রয়ের কথা বলে ঝগড়া করে শাহিদা বেগমকে মারধর করতেন।
২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে আশরাফ সানা জমির বিক্রিয়ের কথা বলে স্ত্রী শাহিদা বেগমের সাথে ঝগড়া করতে থাকেন। ঝগড়ার একপর্যায়ে ঘর থেকে লোহার রড নিয়ে স্ত্রী শাহিদা বেগমকে মারতে যায়। তখন শাহিদা বেগম আশরাফ সানার নিকট থেকে লোহার রডটি কেড়ে নিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন। আঘাতে আশরাফ সানা চিৎকার দিয়ে পাশের একটি ক্ষেতে পড়ে যান। সেখানে গিয়েও শাহিদা বেগম আশরাফ সানার মাথা এলোপাথারি আঘাত করতে থাকেন। ওই আঘাতেই ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ওই দিন বিকালে শাহিদা বেগমের মেয়ে আফরোজা বেগম বাদী হয়ে বালিয়াকান্দি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ শাহিদা বেগমকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেন। ৯ মাস কারাভোগের পর রায় প্রদানের দিন পর্যন্ত তিনি জামিনে ছিলেন। তবে রায় প্রদানের সময় আদালতে উপস্থিত হলে আদালত শাহিদা বেগমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী জজ আদালতের সরকারি কৌসুলি এ্যাড. উজীর আলী বলেন, আদালত রায় প্রদানের সময় বলেছেন শাহিদা বেগম যে অপরাধ করেছে এর জন্য তার মৃত্যুদণ্ড হয়। কিন্তু তার বয়স বিবেচনায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়েছে।