বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত পরিস্থিতি রবিবার রাতে শান্ত থাকলেও সোমবার বদলে গেছে ওই দৃশ্য। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১ টার পর থেকে ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে দেখা মিলেছে ‘কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী’।
ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ঢেঁকিবনিয়া এলাকায় কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে সীমান্তবর্তী মিয়ানমার বিজিপির কয়েকটি ফাঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে কারা এ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তা বলা যাচ্ছে না।
সীমান্তের তুমব্রু এলাকার বাসিন্দা রফিকুল আলম জানিয়েছেন, সীমান্তে মিয়ানমার বিজিপি সদস্যদেরকে তাড়িয়ে তাদের ঘাঁটিতে শক্ত অবস্থান করেছে আরাকান আর্মি। রাতের বেলা নিজেরদের অবস্থান জানান দিতে গুলি বর্ষণ করে থাকে। দিনে বিদ্রোহীরা পাহাড়ের বাঙ্কারে অবস্থান নেন। যা সীমান্তের এপাড় থেকে দেখা যাচ্ছে। সোমবার ঢেঁকিবনিয়া এলাকায় বিজিপি ফাঁড়িতে আগুন দেয়া হল। এটা ঠিক পরিষ্কার না কারা আগুন দিয়েছে। ধোঁয়ার কু-লীর সাথে সাথে কিছু গুলির শব্দও শুনা যাচ্ছে। তবে টেকনাফের নাফনদীর ওপারে বিস্ফোরণের শব্দ শুনা গেছে।
হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং এলাকার সংবাদকর্মী তাহের নঈম জানিয়েছেন, হোয়াইক্যংয়ের লম্বাবিল ও উনচিপ্রাং সীমান্তের ওপারে নাফনদীতে একটি ছোট দ্বীপ রয়েছে। ওটা তোতক দ্বীপ নামের পরিচিত। ওই দ্বীপে কাছা-কাছি মিয়ানমারের চাকমাকাটা, কোয়াংচিমন ও কুমিরখালী এলাকায় বিজিপির ঘাঁটি দখলে নিতে যুদ্ধ চলছে। এর জের ধরে দ্বীপে থাকা কিছু রোহিঙ্গাদের নাফনদীতে নেমে যেতে দেখা যোয়। গোলাগুলি কমলে ওরা আবারও দ্বীপে চলে যাচ্ছে। ধরা করা হচ্ছে ওই দ্বীপে কিছু রোহিঙ্গা অবস্থান নিয়েছে। যারা অনুপ্রবেশ করতে পারে। তবে বিজিবি ও কোস্টগার্ড কঠোর নজরধারী দেখা যাচ্ছে।
হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারি জানান, নাফনদীর ওপারে বিস্ফোরণের শব্দ শুনা যাচ্ছে। তবে তা লাগাতার না। থেমে থেমে বিস্ফোরণ হচ্ছে।
বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, ওপার থেকে যাতে কোনো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে ব্যাপারে বিজিবি সতর্ক পাহারায় আছে।
কোস্টগার্ডের টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার লুৎফুর লাহিল মাজিদ বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ওপার থেকে একজন রোহিঙ্গাও যাতে ঢুকতে না পারে, এ ব্যাপারে তাঁরা সর্বোচ্চ সতর্ক পাহারায় আছেন।