স্থল অভিযানের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাজার দক্ষিণাঞ্চল থেকে জনগণকে সরে আসার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। খান ইউনিসের উত্তর এবং মধ্যাঞ্চলের ছয়টি এলাকার ১ লাখ ৬৭ হাজার মানুষকে যত দ্রুত সম্ভব এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তারা পূর্বাঞ্চলে বেশকিছু ইসরায়েলি ট্যাংক দেখতে পেয়েছেন। অপরদিকে একটি স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সেখানে হতাহত লোকজনের সংখ্যা বাড়ছে।
এর আগেও গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। সে সময় গাজার ২৩ লাখের মধ্যে বেশির ভাগ মানুষই দক্ষিণাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিল। বর্তমানে তাদের দক্ষিণাঞ্চল থেকেও সরে যেতে বলা হচ্ছে।
ইউনিসেফ মুখপাত্র জেমস এলডার বলেন, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ড গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উত্তরাঞ্চলে যা ঘটেছে তা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের শক্ত বার্তা আমাদের কাছে এসেছে। সেখানকার লোকজন ভয়াবহ অবস্থার মুখোমুখি হয়েছে। উত্তরে যা ঘটেছে দক্ষিণে তা ঘটতে দেওয়া যেতে পারে না। কিন্তু দক্ষিণেও ইসরায়েলের সেনারা একই ধরনের কর্মকাণ্ড করছে।
তিনি বলেন, গাজার বর্তমান পরিস্থিতি হলো সেখানে প্রতি ১০ মিনিট অন্তর অন্তর বোমা ফেলা হচ্ছে। উত্তরের মানুষ বোমার আতঙ্কে এখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তারা শিশুদের নিয়ে তিন থেকে চারবার করে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এভাবে করেও তারা পরিবারের সঙ্গে থাকার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এখন তাদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।
ইউনিসেফ মুখপাত্র বলেন, আমি সেখানে শিশুর পর শিশুকে হুইলে দেখছি। হামলায় আহত তাদের মা-বাবা স্ট্রেচারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চিৎকার করছেন। বর্তমানে তারা হাসপাতালেও নিরাপদ নন। আশ্রয়কেন্দ্রেও নন। এখানে আমি কোথাও নিরাপদ বোধ করছি না। কেউই এখানে এখন আর নিরাপদ নয়।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। রোববার গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের মহাপরিচালক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে এ তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, গাজা উপত্যকায় এখন ১৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন।
সাত দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষে গত শুক্রবার থেকে আবারও গাজায় নির্বিচার বোমা হামলা চালানো শুরু করে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এখন তারা গাজার দক্ষিণাঞ্চলে বিমান থেকে অনবরত বোমা ফেলছে। যুদ্ধের শুরুতে উত্তরাঞ্চলে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলিরা। ওই সময় সাধারণ মানুষকে দক্ষিণাঞ্চলে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।