একদিকে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় মুড়ি-মুড়কির মতো মরছে গাজা উপত্যকার নিরীহ ফিলিস্তিনিরা। এর মধ্যেই অধিকৃত পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরেও চলছে ইসরায়েলি অভিযান, গ্রেপ্তার ও হত্যা করা হচ্ছে ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের। এমন পরিস্থিতিতেও ইসরায়েলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে তিন ফিলিস্তিনির বিরুদ্ধে। তদন্তে জানা গেছে স্বাধীনতাকামী প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কীভাবে ইসরায়েলি বাহিনীকে সাহায্য করতো এসব ফিলিস্তিনি, আর পরিণতিই বা কী হয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে পশ্চিম তীরের তুলকারেম শহরে অভিযুক্ত দুই ফিলিস্তিনিকে ফায়ারিং স্কোয়াডে হত্যা করা হয়। ইসরায়েলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে অভিযুক্ত এই তরুণ হল ৩১ বছর বয়সী হামজা মাবারেচ এবং ২৯ বছর বয়সী আজম জোয়াবরা। তাদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি কথিত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, অভিযুক্ত এসব ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর তাদের মরদেহ বিদ্যুতের খুটিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা এসব ব্যক্তিদের বিশ্বাসঘাতক বলেও তিরস্কার করতে থাকে। অন্যদিকে একই অভিযোগে পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরেও আরেক ফিলিস্তিনি নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম দ্য জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত এক ফিলিস্তিনির পরিবার নিহত ব্যক্তিকে হাতের দূষিত আঙুলের সঙ্গে তুলনা করে তাকে কেটে ফেলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে। এমনকি তার ইসরায়েলের হয়ে কাজ করার দায় তার পরিবার নেবে না বলে জানিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানান, ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনী এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সময় সম্পর্কে আগে থেকেই জানত। ফিলিস্তিনি পাবলিক প্রসিকিউটরের কার্যালয় জানায়, হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পুলিশ তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহের জন্য সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে থাকে। সংস্থাটির বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের বিভিন্ন হুমকি বা ইসরায়েলে কাজ করার জন্য অনুমতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তথ্য সংগ্রহ করার ইতিহাস আছে। এছাড়াও নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন প্রলোভনে ফিলিস্তিনিদের নিজ দেশের বিরুদ্ধে তথ্য পাচারে উৎসাহিত করতে বেশ প্রসিদ্ধ ইসরায়েলের এই সংস্থাটি।