টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে ১১ দিনের শিশু কন্যা পাপিয়ার পিতৃত্বের দাবিতে বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে অসহায় খাদিজা।
জানা যায়, ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মোশারফ হোসেন মুজার মেয়ে খাদিজা (১৮) আর একই গ্রামের নায়েব আলীর ছেলে শাকিল (২০) সম্পর্কে চাচা-ভতিজি। চাচা-ভাতিজি হওয়ায় তাদের কেউ সন্দেহের চোখে দেখতো না। একসময় ভাতিজি খাদিজার ওপর কু নজর পড়ে চাচা শাকিলের। খাদিজাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় শাকিল। সম্পর্কের বিষয়টি মাথায় না রেখে রাজি হয়ে যায় খাদিজা। কিছুদিন না যেতেই তাদের প্রেমের সম্পর্ক দৈহিক সম্পর্কে রুপ নেয়। একপর্যায়ে গর্ভবতী হয়ে পড়ে খাদিজা। লজ্জা আর ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখে সে। গত ২৪ শে ফেব্রুয়ারি রাতে ভূঞাপুর এক নার্সের বাসায় কণ্যা সন্তানের জন্ম দেয় খাদিজা।
প্রথমদিকে বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করা হলেও পরে তা প্রকাশ পেয়ে যায়। ২৮ শে ফেব্রুয়ারি রাতে গ্রামের মাতবররা এ নিয়ে এক গ্রাম্য সালিশ বসে। সালিশে নিজের দোষ স্বীকার করে চাচা শাকিল। ওই সালিশে শাকিলের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ওই জরিমানা মানতে অস্বীকৃতি জানায় খাদিজার পরিবার।
পরবর্তীতে ২রা মার্চ রাতে ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির, ইউপি সদস্য ছামান আলী, সাবেক ইউপি সদস্য ওয়াহেদ আলী, স্থানীয় মাতবর শফি ভান্ডারীসহ অন্যান্য মাতবরদের উপস্থিতিতে পুনরায় সালিশ বসে। সালিশে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। পরের দিন রাতে বিয়ের সময় নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বিয়ে নিয়ে টালবাহানা শুরু করে শাকিল ও তার পরিবার। সালিশের রাতেই এলাকা থেকে পালিয়ে যায় শাকিল।
এদিকে ১১ দিনের কণ্যা সন্তানের পিতৃপরিচয়ের দাবিতে মাতবরদের কাছে ঘুরে বেড়াচ্ছে খাদিজা। অপরদিকে শাকিল ও তার পরিবারের লোকজন মামলা না করার জন্য বিভিন্নভাবে ভয় দেখিয়ে যাচ্ছে খাদিজা ও তার পরিবারের লোকজনদের। সন্তান নিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছে সে।
১১দিনের কন্যা সন্তান কোলে নিয়ে খাদিজা জানায়, শাকিল আমার দুঃসম্পর্কের চাচা। তার সহজ-সরল কথাবার্তা ও বিয়ের আশ্বাসে আমি প্রেমের ফাঁদে পা দেই। আর এখন সে আমাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করছে। আমি এই শিশু বাচ্চা নিয়ে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো? এই বলে সে কাঁদতে থাকে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ছামান আলী, সাবেক ইউপি সদস্য ওয়াহেদ আলী ও সালিশের সভাপতি শফি ভান্ডারী বলেন, সালিশে শাকিল তার দোষ স্বীকার করায় আমরা উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এখন শাকিল ও তার পরিবারের লোকজন এ বিয়েতে রাজি নয়। তাই আমরা মেয়ে পক্ষকে আইনের আশ্রয় নিতে বলেছি।