প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ধর্মের দোহাই দিয়ে নারীদের পিছিয়ে রাখার আর কোনও সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী নারী সমাজের উদ্দেশ্যে বলেছেন, অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে নয়, নারীদের নিজের অধিকার নিজেকেই আদায় করে নিতে হবে।
পৃথিবীতে সুন্দর আর কল্যাণকর যা কিছু আছে, সেখানে পুরুষের পাশাপাশি অবদান রয়েছে নারীরও। তাই নারীকে অবহেলা করলে সে সমাজ এগিয়ে যেতে পারে না।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথিবীর ইতিহাসে নারীর অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবন্ধকতা ছিল, ধর্মীয় গোড়ামি ছিল। তারপরও সরকারের প্রচেষ্টা ছিল নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করার। আর এ কারনেই আজ বাংলাদেশের নারীরা এগিয়ে চলছে আপন মহিমায়।
তিনি বলেন, সচিবালয় থেকে সব জায়গায় ডেকেয়ার সেন্টার চালু করেছি। স্বামী পরিত্যক্তা, নির্যাতিত নারীদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করেছি। নারীদের জন্য নীতিমালা করেছি। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। যৌতুক নিরোধ আইন সংশোধন করে যুগোপযোগী করা হচ্ছে। আরও করা হচ্ছে ক্রাইসিস সেন্টার। মেয়েরা যেনো আইনি সহায়তা পায় সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম ধর্ম প্রথম গ্রহণ করেছিলেন একজন নারী। ইসলাম প্রতিষ্ঠার যুদ্ধে প্রথম শহীদও একজন নারী। তাই ধর্মের নামে নারীকে ঘরে বন্দী করে রাখাকে কূপমন্ডুকতার সঙ্গে তুলনা করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার যে সংগ্রাম চলছে, তা বাস্তবায়ন করতে পুরুষের সঙ্গে সমান অংশগ্রহণ প্রয়োজন নারীর।
তিনি বলেন, আমাদের কারও দিকে মুখাপেক্ষী হতে থাকলে চলবে না। নিজেদের এগিয়ে যেতে হবে। নিজের মর্যাদা নিজেকেই কর্মের মধ্য দিয়ে অর্জন করতে হবে। সরকার প্রধান, সংসদের স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা সবাই নারী। বিশ্বের কোথাও এ ধরনের নজির নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার চালু করা হয়েছে। সেখানে ব্যবস্থা করা হয়েছে নারীদের কর্মসংস্থানের। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায়ই সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারবো।
‘অধিকার মর্যাদায় নারী-পুরুষ সমান সমান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস।