অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় কয়েক ঘণ্টার জন্য যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসর। মূলত আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোর সহায়তা ঢুকতে এবং কিছু বিদেশি পাসপোর্টধারীকে গাজা থেকে নিরাপদে বের করতে রাফাহ ক্রসিং খোলার সময় এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
সোমবার মিসরের নিরাপত্তা বাহিনীর দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৯টা থেকে এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। এ সময়ে গাজায় অবস্থিত বিদেশী বাসিন্দাদের মিসরে যাওয়ার জন্য রাফা ক্রসিং খুলে দেওয়া হবে এবং মানবিক সহায়তা ঢুকতে দেওয়া হবে।
মিশরীয় সূত্র জানিয়েছে যে যুদ্ধবিরতি কত ঘন্টা স্থায়ী হবে তার সঠিক সময়কাল সম্পর্কে তারা স্পষ্ট নয়।
তবে এ চুক্তি অস্বীকার করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিদেশিদের বের করে দেওয়ার বিনিময়ে গাজায় বর্তমানে কোনো যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা নেই।
এর আগে সিবিএস নিউজের প্রোগ্রাম ৬০ মিনিটস-এর স্কট পেলকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, হামাসকে উৎখাত করতে হবে, তবে গাজা দখল করা হবে ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় ভুল।
তিনি আরও বলেন, হামাসের চরমপন্থি কার্যক্রম সমস্ত ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধিত্ব করে না। তবে বাইডেন জোর দিয়ে বলেন, তিনি হামাসকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে চান।
এসময় গাজায় মানবিক করিডোর ও ত্রাণ সরবরাহের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন তিনি। সেই সঙ্গে যুদ্ধের নীতি মেনে ইসরায়েলকে লড়াই করার আহবান জানান বাইডেন।
এদিকে গাজার উত্তরাঞ্চলে অব্যাহত রয়েছে ইসরায়েল বাহিনীর হামলা। এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৬’শর বেশি। ধংসস্তুপের নিচে এখনও ১ হাজারের বেশি মানুষ আটকে আছে বলে দাবি ফিলিস্তিনের।
উল্লেখ্য, হামাসের হামলার প্রতিশোধে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সীমান্ত প্রাচীরের কাছে অবস্থান নিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর শত শত ট্যাংক। গাজায় অব্যাহত বিমান হামলার মধ্যেই গত শনিবার ট্যাংকগুলো গাজার কাছে নিয়ে আসা শুরু হয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে- যে কোনও সময় গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরু হতে পারে।
মূলত গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস হামলা চালানোর পর গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী অবরুদ্ধ সরু এ উপত্যকার কাছে ৩ লাখেরও বেশি সেনা জড়ো করেছে তারা।
তবে সীমান্তের কাছে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সেনা জড়ো করে রাখলেও এখনও স্থল অভিযান শুরু করেনি দখলদার ইসরায়েল।