ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেছেন, এক বছরে দেশ থেকে নয় বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ পাচার হয়েছে বলে শোনা যায়। কিন্তু এ অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
গতকাল শনিবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে মাতলুব আহমাদ এ কথা বলেন। তিনি এ সময় আরও বলেন, মামলার কারণে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আটকে আছে। আবার ব্যাংকিং খাতে ৫২ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ হিসেবে আছে। এমন দুটি বড় ক্যানসার নিয়ে একটি দেশ এগোতে পারে না। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকের খেলাপি ঋণ তার মোট ঋণের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। শুদ্ধাচার নিশ্চিত করতে হলে নিজেদের আগে সৎ হবে হবে।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সততা নিশ্চিত করতে না পারলে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলে কোনো ফল আসবে না। অর্থ পাচারের কৌশল হিসেবে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি কিংবা রপ্তানি, হুন্ডির মতো বিষয় উঠে আসে। এতে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যৌথভাবে ‘শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে। এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে ব্যবসায়ী ও আমলারা অংশ নেন।
বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি শেখ মাসাদুল আলম বলেন, এই দেশে বিশাল ঘুষ বাণিজ্য আছে। অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ দেশে থাকছে না। মূলত ২০০৭-০৮ সালের আতঙ্কের কারণে কেউ এখন আর দেশে টাকা রাখতে চাচ্ছেন না।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, ভবিষ্যদের সমস্যার কথা চিন্তা না করেই এ দেশে অনেক আইন করা হয়েছে। এত আইন সম্ভবত পৃথিবীর আর কোনো দেশে নেই। এখন সময় এসেছে অপ্রয়োজনীয় আইন কমানোর। তিনি মত দেন, দেশি বিনিয়োগকারীদের বিদেশেও বিনিয়োগের সুযোগ থাকা উচিত।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, ভবিষ্যতে সরকারের শুদ্ধাচার কৌশলের সঙ্গে ব্যবসায়ীদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ নিয়ে কাজ চলছে।
অর্থ পাচার হয়, ব্যবস্থা নেওয়া হয় না
Share!