বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) বলেছেন, ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন এখনও রাশিয়ায় অবস্থান করছেন এবং ভাড়াটে সৈন্যদলটির কোনো সদস্য বেলারুশে আস্তানা গড়ে তোলেননি। খবর এএফপির
আজ বেলারুশের রাজধানী মিনস্কের প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে সাংবাদিকদের উদ্দেশে লুকাশেঙ্কো বলেন, ‘প্রিগোঝিন সম্পর্কে যতটা জানা গেছে, তিনি সেন্ট পিটার্সবার্গে রয়েছেন … তিনি বেলারুশে নেই। আমি নিশ্চিতভাবে এ কথা জানি। আমি গতকাল তার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছি।’
লুকাশেঙ্কো আরও জানান, কোনো ওয়াগনার সদস্য এখনও বেলারুশে ঘাঁটি গড়তে পারেনি। যদিও ব্যর্থ বিদ্রোহে অংশ নেওয়া যোদ্ধাদের সেখানে আশ্রয় নেওয়ার একটি প্রস্তাব ছিল ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে। বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এই মুহূর্তে তাদের জায়গা পরিবর্তন ও নতুন অবস্থানের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’
রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে জুন মাসের ২৩ তারিখে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন। সে সময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে মস্কোর দিকে সশস্ত্র যোদ্ধাদের বহর পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকে রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রিগোঝিনের কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যায়।
গতকাল বুধবার (৫ জুলাই) রুশ গণমাধ্যমে ২৫ জুনের কিছু ছবি সম্প্রচার করা হয় যাতে দেখা যায় পুলিশ প্রিগোঝিনের বিলাসবহুল ম্যানসনে প্রবেশ করছে। ছবিতে একটি হেলিকপ্টারও দেখা যায় যা পুলিশ ব্যবহার করছিল। অভিযানে সেখান থেকে রুশ মুদ্রা রুবল ও ডলারের বান্ডিল, সোনার বার, অস্ত্রশস্ত্র, আলমারি ভর্তি পরচুলা, প্রিগোঝিনের নামে তবে ভিন্ন লোকের ছবিসহ বেশ কিছু পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়।
বিদেশি সাংবাদিকদের প্রতি বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো জানান যে, তিনি ওয়াগনার যোদ্ধাদের আতিথেয়তা দিতে মোটেও ‘ভীত’ বা ‘চিন্তিত’ নন। বরং তিনি মনে করেন ওই যোদ্ধারা হতে পারে সম্পদ। লুকাশেঙ্কো বলেন, ‘আমি মনে করি না ওয়াগনার সংগঠিত হয়ে বেলারুশের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেবে। তবে যদি এই ইউনিটগুলোকে কার্যকর করতে চাই, তাৎক্ষণিকভাবে তা করতে পারব, আর এ ক্ষেত্রে তাদের অভিজ্ঞতা হবে খুবই প্রশংসনীয়।’
লুকাশেঙ্কো আরও বলেন, ‘প্রিগোঝিনকে আমার চাইতে অনেক ভাল করে জানেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। আপনারা কি মনে করেন তিনি প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে কালকেই প্রিগোঝিনকে আক্রমণ করবেন? না, তা হতে যাচ্ছে না।’
তবে যাই হোক না কেন প্রিগোঝিন যে বেলারুশে নেই বা তিনি এখনও রাশিয়াতেই রয়েছেন এমন খবরে ওয়াগনার বিদ্রোহ দমনে যে চুক্তি ক্রেমলিন করেছিল তা নিয়ে নতুন করে সন্দেহ দানা বাঁধতেই পারে।