কোরবানি ইসলামি শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কোরবানির উদ্দেশ্যে পশু জবাইয়ের সময় হলো- জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত।
কোরবানি করতে হবে ঈদুল আজহার নামাজের পরে। কেউ ঈদের আগে কোরবানি করলে তার কোরবানি শুদ্ধ হবে না। কেননা, নবীজি ঈদের নামাজের পরে কোরবানি করতে বলেছেন।
বারা ইবনে আজিব (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল (স.) আমাদের উদ্দেশে খুতবা দিলেন। তাতে বললেন, আমাদের এই দিবসে প্রথম কাজ নামাজ আদায় করা, এরপর কোরবানি করা। সুতরাং যে এভাবে করবে তার কাজ আমাদের তরিকামতো হবে। আর যে আগেই জবেহ করেছে, তা পরিবারের জন্য প্রস্তুতকৃত গোশত, কোরবানি নয়। (সহিহ বুখারি: ৯৬৮; সহিহ মুসলিম: ১৯৬১; সহিহ ইবনে হিব্বান: ৫৯০৭)
এমনকি কোরবানির ঈদে নামাজ শুরুর আগে নবীজি কিছু খেতেন না। হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (স.) ঈদুল ফিতরের দিন কোনো কিছু না খেয়ে ঈদগাহে যেতেন না; আর ঈদুল আজহার দিন নামাজ না পড়ে কিছু খেতেন না। (জামে তিরমিজি: ৫৪২)
বৃষ্টিবাদল বা অন্যকোনো ওজরে যদি প্রথম দিন ঈদের নামাজ না হয়, তাহলে ঈদের নামাজের সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম দিনেই কোরবানি করা জায়েজ’। (সহি বুখারি: ২/৮৩২, কাজিখান: ৩/৩৪৪, আদ্দুররুল মুখতার: ৬/৩১৮)
‘১০, ১১ ও ১২ জিলহজ—এই তিন দিনের মধ্যে প্রথম দিন কোরবানি করা অধিক উত্তম। এরপর দ্বিতীয় দিন, তারপর তৃতীয় দিন।’ (রদ্দুল মুহতার: ৬/৩১৬)
রাতেও কোরবানি করা জায়েজ। তবে তা শুধু জিলহজের ১০ ও ১১ তারিখ দিবাগত রাতে করতে হবে। ১২ তারিখ দিবাগত রাতে এবং ঈদের আগের রাতেও কোরবানি করা যাবে না। কেননা ওই সময়গুলো কোরবানির সময়ের অন্তর্ভুক্ত নয়।
সুতরাং ১০ ও ১১ তারিখ রাতে কোরবানি করতে নিষেধ নেই। তবে আলোস্বল্পতার কারণে জবাইয়ে ত্রুটি হতে পারে বিধায় রাতে জবাই করা অনুত্তম। অবশ্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকলে রাতে জবাই করতে কোনো অসুবিধা নেই। (তথ্যসূত্র: ফতোয়ায়ে খানিয়া: ৩/৩৪৫, আদ্দুররুল মুখতার: ৬/৩২০, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/২৯৬, আহসানুল ফতোয়া: ৭/৫১০)