বাংলাদেশ রেলওয়ের এক হাজার ৪৪১ জন খালাসি পদে ৩০ কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ অনুসন্ধান শেষে ১ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। অনুসন্ধানে ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ প্রমান না পাওয়ায় বিষয়টি নথিভূক্ত করার সুপারিশ করা হয়। নিয়োগে উৎকোচের ঘটনাটি তদন্তে প্রমানিত না হওয়ায় তাদের সম্পদের অনুসন্ধান করা হচ্ছে বলে, দুদকের নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। শনিবার অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম এফএনএসকে জানান, কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় গত বছরের অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ অভিযোগে ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে রেলপথ মন্ত্রীর পিএস এ.কে.এম গোলাম কিবরিয়া মজুমন্দারকে জেরা করা হয়। এর পর ১৬ নভেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে নিয়োগ কমিটির বাঁকি ৬ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা। এ ঘটনায় যাদের জেরা করা হয়েছে তারা হলেন- মোজাম্মেল হক পূর্বঞ্চালের সাবেক মহাব্যবস্থাপক চট্টগ্রাম, মো. শহিদুল ইসলাম অতিরিক্ত সিই(পথ) পূর্ব চট্টগ্রাম কমিটির আহবায়ক, মো. মোফাজ্জেল হোসেন (এসপিও) পূর্ব চট্টগ্রাম, বর্তমানে পিআরএল সদস্য সচিব, ফরিদ আহমেদ (এজিএম) পূর্ব চট্টগ্রাম, বর্তমানে ডিসিওএস পরিদর্শন সদস্য, এফএম মহিউদ্দিন এম.ই (সদর)পূর্বাঞ্চল বর্তমানে ডব্লিউ.এম.সি সদস্য পাহারতলী, মোস্তাফিজুর রহমান ডিটি.এস সদস্য. লালমনি।
দুদকে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০১০ সালে খালাসি নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এর বিপরীতে ৪০ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়ে। ২০১২ সালে পর্যায়ক্রমে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। রেলওয়েতে খালাসি পদে নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর পক্ষ থেকে ৪০০ জনের একটি তালিকা দেয়া হয়। এ তালিকার শতভাগ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রেলওয়ে শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের অন্তভূক্ত ৭ সংগঠনের পক্ষ থেকে দেয়া হয় ১১৬ জনের তালিকা। নিয়োগপ্রাপ্ত ১ হাজার ৪৪১ জনের মধ্যে অন্তত ১ হাজার জনের চাকরি হয়েছে টাকার বিনিময়ে। প্রতি পদের বিপরীতে ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়। এর মধ্যে থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক লীগের সিন্ডিকেট অন্তত ১৫ কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন। রেলওয়ে শ্রমিক লীগের পক্ষ থেকে ৬০০ জনের তালিকা মন্ত্রীকে দেয়া হয়। এই তালিকা থেকে চাকরি হয়েছে ১৫০ জনের। নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলা কোটা মানা হয়নি। এক জেলার প্রার্থীকে অন্য জেলায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কোনো কোনো জেলা বৈষম্যের শিকার হয়েছে। নথিপত্র পর্যালোচনা করে নিয়োগে সবকিছুই ঠিক রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
অনুসন্ধান সূত্রে জানা যায়, পূর্বাঞ্চলের সাবেক জিএম মোজাম্মেল হক দায়িত্বে থাকাকালে ২০০ জন ব্যক্তিকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে চাকরি দিয়েছে। নিয়োগ বাণিজ্যের ঘুষের টাকা সরাসরি লেনদেন করেছেন তার স্ত্রী। প্রতিজনের নিকট হতে তিন লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়।মোজাম্মেল হক পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী থাকা অবস্থায় সরকারের ক্রয় আইন ২০০৬ এবং ক্রয়বিধি ২০০৮ সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে তথাকথিত এল টি এম এর মাধ্যমে প্রায় একশত ৭৫ কোটি টাকা ব্যয় করে শতকরা ২৫% কমিশন নিয়ে এ.পি.পি. এবং স্টিমেট স্বাক্ষর করেছে।
তার আমলে ড্রেন পরিষ্কার, পূনমেরামত, টয়লেট পরিষ্কার, পাইপ মেরামত, সেফটি ট্যাংক মেরামত, চুনকাম করা। এ সব কাজ যেখানে ১০% ব্যয় করার কথা ছিল সেখানে ২৫% ব্যয় দেখানো হয়েছে। এই ধরনের কাজে রেল ভবনের নিষেধাজ্ঞা ছিল তা সত্ত্বেও বাজেট না থাকা অবস্থায় সে ৭৬ কোটি টাকা গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে অতিরিক্ত ব্যয় করেছেন। ওই সময়ে বরাদ্দ দেয়া অর্থ রেল ও সেতু মেরামতের কাজ না করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্য কাজে ব্যয় করা হয়। যেসব কাজ করানো হয়েছে তা নামকাওয়াস্তে ও অপ্রয়োজনীয়। রাজধানীর অদুরে গাজীপুর জেলায় বোর্ড বাজার খাইলকোড় এলাকায় তার নামে-বেনামে দুটি বাড়ি, চট্টগ্রামে হিলভিউ নামে বিলাশ বহুল একটি বাড়ি, মিরপুর কালসীতে তার পরিবারের নামে ৫কাঠা জায়গা রয়েছে। সেখানে একটি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। ভবনটি তার স্ত্রীর নামে আছে। বিদেশে কোন অর্থ পাচার করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধান করতে অক্টো-খান প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছে কমিশন।
এ সব দুর্নীতিবাজদের সম্পদের হিসেব চাওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান এফএনএসকে বলেন, নিয়োগে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রমান পাওয়া না গেলে সম্পদের পরিমান অসামানযশ্য মনে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বিবরণী চাওয়া হবে। মোজাম্মেল হকের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফিরোজ সালাহ্ উদ্দিন বলেন, তার বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলে দৃষ্টান্ত মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আমজাদ হোসেন জানান, অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার পর তার সারমর্ম বিশ্লেষণ করে তার বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মোজাম্মেল হকের এতো অপকর্মের পরেও পদোন্নতি পেয়ে তিনি পরিচালক হয়েছেন। বর্তমানে রেল ভবনের সপ্তম তলায় সংস্কার প্রকল্পের পরিচালক পদে কর্মরত আছেন। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ওই সময় চট্টগ্রাম রেলওয়ের কোন দায়িত্বে ছিলাম না। এছাড়া আমি এখন মার্কেটে আছি এ বিষয়ে এসব বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। আগামীকাল অফিসে আসেন।
দুদকে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০১০ সালে খালাসি নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এর বিপরীতে ৪০ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়ে। ২০১২ সালে পর্যায়ক্রমে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। রেলওয়েতে খালাসি পদে নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর পক্ষ থেকে ৪০০ জনের একটি তালিকা দেয়া হয়। এ তালিকার শতভাগ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রেলওয়ে শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের অন্তভূক্ত ৭ সংগঠনের পক্ষ থেকে দেয়া হয় ১১৬ জনের তালিকা। নিয়োগপ্রাপ্ত ১ হাজার ৪৪১ জনের মধ্যে অন্তত ১ হাজার জনের চাকরি হয়েছে টাকার বিনিময়ে। প্রতি পদের বিপরীতে ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়। এর মধ্যে থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক লীগের সিন্ডিকেট অন্তত ১৫ কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন। রেলওয়ে শ্রমিক লীগের পক্ষ থেকে ৬০০ জনের তালিকা মন্ত্রীকে দেয়া হয়। এই তালিকা থেকে চাকরি হয়েছে ১৫০ জনের। নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলা কোটা মানা হয়নি। এক জেলার প্রার্থীকে অন্য জেলায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কোনো কোনো জেলা বৈষম্যের শিকার হয়েছে। নথিপত্র পর্যালোচনা করে নিয়োগে সবকিছুই ঠিক রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
অনুসন্ধান সূত্রে জানা যায়, পূর্বাঞ্চলের সাবেক জিএম মোজাম্মেল হক দায়িত্বে থাকাকালে ২০০ জন ব্যক্তিকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে চাকরি দিয়েছে। নিয়োগ বাণিজ্যের ঘুষের টাকা সরাসরি লেনদেন করেছেন তার স্ত্রী। প্রতিজনের নিকট হতে তিন লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়।মোজাম্মেল হক পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী থাকা অবস্থায় সরকারের ক্রয় আইন ২০০৬ এবং ক্রয়বিধি ২০০৮ সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে তথাকথিত এল টি এম এর মাধ্যমে প্রায় একশত ৭৫ কোটি টাকা ব্যয় করে শতকরা ২৫% কমিশন নিয়ে এ.পি.পি. এবং স্টিমেট স্বাক্ষর করেছে।
তার আমলে ড্রেন পরিষ্কার, পূনমেরামত, টয়লেট পরিষ্কার, পাইপ মেরামত, সেফটি ট্যাংক মেরামত, চুনকাম করা। এ সব কাজ যেখানে ১০% ব্যয় করার কথা ছিল সেখানে ২৫% ব্যয় দেখানো হয়েছে। এই ধরনের কাজে রেল ভবনের নিষেধাজ্ঞা ছিল তা সত্ত্বেও বাজেট না থাকা অবস্থায় সে ৭৬ কোটি টাকা গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে অতিরিক্ত ব্যয় করেছেন। ওই সময়ে বরাদ্দ দেয়া অর্থ রেল ও সেতু মেরামতের কাজ না করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্য কাজে ব্যয় করা হয়। যেসব কাজ করানো হয়েছে তা নামকাওয়াস্তে ও অপ্রয়োজনীয়। রাজধানীর অদুরে গাজীপুর জেলায় বোর্ড বাজার খাইলকোড় এলাকায় তার নামে-বেনামে দুটি বাড়ি, চট্টগ্রামে হিলভিউ নামে বিলাশ বহুল একটি বাড়ি, মিরপুর কালসীতে তার পরিবারের নামে ৫কাঠা জায়গা রয়েছে। সেখানে একটি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। ভবনটি তার স্ত্রীর নামে আছে। বিদেশে কোন অর্থ পাচার করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধান করতে অক্টো-খান প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছে কমিশন।
এ সব দুর্নীতিবাজদের সম্পদের হিসেব চাওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান এফএনএসকে বলেন, নিয়োগে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রমান পাওয়া না গেলে সম্পদের পরিমান অসামানযশ্য মনে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বিবরণী চাওয়া হবে। মোজাম্মেল হকের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফিরোজ সালাহ্ উদ্দিন বলেন, তার বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলে দৃষ্টান্ত মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আমজাদ হোসেন জানান, অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার পর তার সারমর্ম বিশ্লেষণ করে তার বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মোজাম্মেল হকের এতো অপকর্মের পরেও পদোন্নতি পেয়ে তিনি পরিচালক হয়েছেন। বর্তমানে রেল ভবনের সপ্তম তলায় সংস্কার প্রকল্পের পরিচালক পদে কর্মরত আছেন। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ওই সময় চট্টগ্রাম রেলওয়ের কোন দায়িত্বে ছিলাম না। এছাড়া আমি এখন মার্কেটে আছি এ বিষয়ে এসব বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। আগামীকাল অফিসে আসেন।
Share!