প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অগ্নি-সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তির পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি যাতে কেউ নস্যাৎ করতে না পারে সেজন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সতর্ক থাকুন যাতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কেউ বাধা দিতে না পারে, কেউ আবার অগ্নিসংযোগ-সন্ত্রাস করার সাহস না পায়, এবং কেউ আর যাতে কখনো কারো জীবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে না পারে।’
পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, হ্যাঁ, আন্দোলন সংগ্রাম করবে, জনগণকে নিয়ে করবে। কিন্তু সেখানে কেউ যদি কোনো ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালায়, তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা সবাইকে নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দল-মত অনেক কিছু থাকতে পারে, কিন্তু দেশের স্বার্থে, মানুষের কল্যাণে, দেশের কল্যাণে, দেশের উন্নয়নে কোনো কাজ যেন কেউ ধ্বংস করতে না পারে, কোনো কাজে যেন কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে। সেদিকে বিশেষভাবে আপনাদের দৃষ্টি দিতে হবে।
অতীতের অবদানের জন্য পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাই, বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রায় আপনাদের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। যেহেতু আপনারা… অনেক দুর্যোগ এসেছে, মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ, সেগুলো আপনারা কঠোর হস্তে দমন করেছেন, জঙ্গিবাদ দমন করেছেন, পাশাপাশি আমাদের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রেখেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, একটি দেশের আইন-শৃঙ্খলা হচ্ছে সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই আইনশৃঙ্খলা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা, এ দায়িত্ব কিন্তু পুলিশ বাহিনীকেই করতে হয়। আসলে পুলিশ বাহিনীর ওপর দায়িত্বটা বেশি।
তিনি বলেন, আমরা এমনিতে পুলিশ বাহিনীকে বিভিন্নভাবে ট্রেনিং দেওয়া বা সেক্টরভিত্তিক আমরা বাহিনী করে দিয়েছি। সার্বিকভাবে আসলে পুলিশ বাহিনীর দায়িত্ব বেশি।
আওয়ামী লীগ সরকার টানা ক্ষমতায় থাকার সুফল তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশে যতটুকু উন্নতি আমরা করেছি, এগুলো এমনি এমনি আসেননি। এর জন্য আমাদের শ্রম দিতে হয়েছে, কষ্ট করতে হয়েছে। আজকের বাংলাদেশে আমরা একটা বিরাট পরিবর্তন আনতে পেরেছি। … আমরা নিজেরাই শুধু মুখে বলি না। আজ সারা বিশ্বে কিন্তু বাংলাদেশ প্রশংসিত।
করোনা মহামারিসহ বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা এটা কিন্তু অত্যন্ত দুঃসহ কাজ, এটা আমরা অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে করতে পেরেছি। আর এই করতে পারার পেছনে আপনাদেরও যথেষ্ট অবদান রয়েছে, পুলিশ বাহিনীর অবদান রয়েছে।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে টানা তিনবারের সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ, বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে সেটাই আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশ হবে প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন স্মার্ট বাংলাদেশ। উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। সে লক্ষ্য পূরণের জন্য সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
সভায় প্রধানমন্ত্রী পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার বক্তব্য শোনেন। র্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন, পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন, আবদুল বাতেন, আমেনা বেগম, যশোর জেলা এসপি প্রলয় কুমার জোয়ারদার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশের ওপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।