Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

আমিরাতে ভ্রমণ ভিসায় গিয়ে চাকরি : সুযোগের কি অপব্যহার হচ্ছে?

দুবাই প্রতিনিধি: নুরে আলম পারভেজ, ভ্রমণ ভিসায় আরব আমিরাতে গিয়ে ভিসা পরিবর্তন করে কর্মসংস্থান খুঁজছেন হাজার হাজার বাংলাদেশি তরুণ। ভ্রমণে এসে কোম্পানির বা পার্টনার ভিসা লাগানোর সুযোগ থাকায় এ পথে প্রতিদিনই পা বাড়াচ্ছেন বাংলাদেশিরা।

আবার অনেকেই প্রতারণার শিকারও হচ্ছেন। এছাড়া চাকরির ভিসা পাইয়ে দেয়ার নামেও দালাল চক্রের প্রলোভনে অনেক বাংলাদেশি আমিরাতে এখন বেকায়দায় পড়েছেন।

জানা গেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশিদের জন্য কর্মী ভিসা বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ ৯ বছরে বাংলাদেশ থেকে শ্রম ভিসায় কোনো নাগরিক আমিরাতে যেতে পারেননি। তবে বৈধপথে টাকা পাঠাতে আরব আমিরাত প্রবাসীদের জুড়ি নেই।

গত বছরও বৈধপথে শীর্ষ রেমিট্যান্স পাঠানো বিশ্বের নানা দেশের ৪২ জন নির্বাচিত সিআইপির মধ্যে ৯ জনই আরব আমিরাত প্রবাসী। প্রতিবারের মতো রেমিট্যান্স পাঠানোর তালিকায় সর্বশেষ বছরেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে দেশটি।

এদিকে, বাংলাদেশিদের জন্য এক ও তিনমাস মেয়াদি ভিজিট ভিসা চালু রেখেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এ ভিসায় কোনো কাজের অনুমতি নেই। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দেশটিতে অবস্থান করলেই আটক ও জরিমানার বিধানও রয়েছে।

সম্প্রতি ভিজিট ভিসায় আমিরাতে অবস্থান করা লোকদের বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মী হিসেবে সাময়িকভাবে ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ দেয় দেশটি। এরপর থেকেই ভিজিট ভিসা যেন সোনার হরিণ। এ সুযোগকে প্রতারণার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে দালাল চক্র।

ভিজিট ভিসায় আগত বাংলাদেশিদের ভিসা স্ট্যাটাস পরিবর্তন করে কোম্পানির বা ইনভেস্টার/পার্টনার ভিসা লাগানোর সুযোগ থাকায় হাজার হাজার বাংলাদেশি আসছেন আমিরাতে। বাংলাদেশি অনেক ব্যবসায়ী নিজেদের ব্যবসা পরিচালনার জন্য আত্মীয়-স্বজনদের ভিজিট ভিসায় এনে নিজ প্রতিষ্ঠানে পার্টনার ভিসা লাগিয়ে ব্যবসা করেন।

আবার ক্ষুদ্র বিনিয়োগের মাধ্যমেও ব্যবসা খুলে কেউ কেউ ভিজিট ভিসায় নিজস্ব লোক এনে ভিসা পরিবর্তন করে পার্টনার বা ইনভেস্টর ভিসা লাগান।

আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রমরমা ঘুষ-বাণিজ্যে শুরু করে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন। অভিযোগ উঠে গত বছরের শেষের দিকে শাহজালাল বিমানবন্দরে ভিজিটে গমনেচ্ছু যাত্রীদের আটকিয়ে করা হয় নানা হয়রানি। এতে বিপাকে পড়েন অনেক প্রবাসগামী যাত্রী। চাহিদামত ঘুষ না দিলে ইমিগ্রেশনে কড়াকড়ির নামে অফলোডের বলি হন প্রবাসগামীরা।

অফলোডের নামে এমন বিড়ম্বনায় অনেকেই ক্ষতিসাধিত হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা দিয়ে যারা ইমিগ্রেশনে কন্ট্রাক্ট করেন তারাই এসে পৌঁছান আমিরাতে।

বিভিন্ন ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস এজেন্সির তথ্যমতে, এক মাসের ভিজিট ভিসা মাত্র ১০-১৩ হাজার টাকা। ৩ মাসের জন্য ডিপোজিটসহ মাত্র ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু দালাল চক্র ও কিছু অসাধু এজেন্সি মিলে কন্ট্রাক্ট এর নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

অপর দিকে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশি শ্রমবাজারে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। কমিউনিটি নেতারা দাবি করছেন, ভ্রমণে আসা অনেকেই ভিসার ধরণ পরিবর্তন করে কাজের ভিসা লাগাচ্ছেন। তাই ভ্রমণকারীদের নিয়ে ভবিষ্যতে ঝুঁকি বাড়তে পারে বলেও মনে করছেন তারা।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top