বিশ্বজুড়ে চলছে তীব্র দাবদাহ। এই তীব্র গরমে সুস্থ থাকতে চিকিৎসকরা পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করার পরামর্শ দিচ্ছেন। পানি পান করার সময় ইসলাম কিছু বিষয় লক্ষ রাখতে বলেছে। যেন মানুষ পানিবাহিত রোগ থেকে বেঁচে থাকে এবং পানি পান করে পূর্ণ তৃপ্তি লাভ করে।
পানি পান করার কয়েকটি সুন্নত হলো—
১. পানির পাত্র ব্যবহার করা : রাসুলুল্লাহ (সা.) পানির উৎস মুখ ডুবিয়ে পানি পান করার পরিবর্তে পানি পাত্রে নিয়ে পান করতে বলেছেন। কেননা পানির উৎস মুখ ডুবিয়ে দিলে রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে। তিনি বলেন, তোমাদের কেউ যেন কুকুরের মতো পানিতে মুখ দিয়ে পান না করে, এক হাতেও যেন পানি পান না করে। যেমন একদল করে থাকে। যাদের প্রতি আল্লাহ তাআলা অসন্তুষ্ট। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৪৩১)
অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) মশকের মুখে মুখ লাগিয়ে পানি পান করতে বারণ করেছেন। (রিয়াজুস সালেহিন, হাদিস : ৭৬৭)
২. পরিষ্কার পাত্রে পান করা : রাসুলুল্লাহ (সা.) পানির পাত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাতের বেলা পানপাত্র আন্দোলিত না করে (পরিষ্কার না করে) যেন পানি পান না করে। তবে পাত্র ঢাকা অবস্থায় থাকলে ভিন্ন কথা। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৪৩১)
৩. বিসমিল্লাহ পাঠ করা : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন তোমরা পান করো, তখন শুরুতে বিসমিল্লাহ এবং শেষে আল-হামদুলিল্লাহ পাঠ করবে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৮৫)
৪. ডান হাতে পান করা : মহানবী (সা.) বলেন, তোমরা বাম হাতে আহার কোরো না। কেননা শয়তান বাম হাতে আহার করে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩২৬৮)
৫. বসে পান করা : নবীজি (সা.) দাঁড়ানো, হাঁটা বা শোয়া অবস্থায় পানি পান না করে বসে বসে পানি পান করার নির্দেশ দিয়েছেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলেন, দাঁড়িয়ে, হেঁটে বা শুয়ে পানি পান করলে শ্বাসনালিতে পানি ঢুকে যাওয়ার ভয় থাকে। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) দাঁড়িয়ে পানি পান করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২০২৪)
৬. তিন শ্বাসে পান করা : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা এক চুমুকে উটের মতো পানি পান কোরো না; বরং দুই-তিনবার (শ্বাস নিয়ে) পান কোরো। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৮৫)
৭. গ্লাসে নিঃশ্বাস না ফেলা : নবীজি (সা.) বলেন, তোমরা (পান করার সময়) পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলো না। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৫৪)
৮. পান শেষে আলহামদুলিল্লাহ! : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন তোমরা পান করো, তখন শুরুতে বিসমিল্লাহ এবং শেষে আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করবে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৮৫)
আল্লাহ সবাইকে সুন্নত অনুসরণের তাওফিক দান করুন। আমিন।