Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

দুর্ভিক্ষের রংপুর এখন উদ্বৃত্ত খাদ্যের অঞ্চল : প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সরকারের নানান পদক্ষেপের ফলে এক সময়ের দুর্ভিক্ষ বা খাদ্য সংকটের রংপুর এখন উদ্বৃত্ত খাদ্যের অঞ্চলে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (১৬ জানুয়ারি) নবনির্মিত ‘রংপুর বিভাগীয় সদরদপ্তর কমপ্লেক্স ভবন’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রংপুর বিভাগীয় সদরদপ্তর কমপ্লেক্সের মাল্টিপারপাস হলের এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারে এসে রংপুর অঞ্চলের মঙ্গা দূর করেছি। ২০১০ সালে আমরা রংপুর বিভাগ করে দেই। এখন উদ্বৃত্ত খাদ্যের অঞ্চল হয়ে গেছে এ রংপুর। এক সময় খাবারের অভাবে মরতেন। মানুষ দেখলে মনে হতো জীবন্ত কঙ্কাল হেঁটে বেড়াচ্ছে। এ অবস্থা আমার নিজের চোখে দেখা। আল্লাহর রহমতে এখন আর ওই অবস্থা নেই। আমরা সেখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। দুর্ভিক্ষ তো দূর হয়েছেই, বরং খাদ্য উদ্বৃত্ত থাকছে।’

তিনি বলেন, ‘রংপুরে গত ১৩ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, এর আগে কখনও হয়নি। দীর্ঘ সময় তো রংপুরের লোকই ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু রংপুরের মানুষের তেমন কোনো ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। অথচ আমরা ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কর্মসূচি রংপুর বিভাগ দিয়েই শুরু করেছি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘সব উন্নয়ন নির্ভর করে সরকারের চিন্তার ওপর। আওয়ামী লীগ জাতির পিতার পথকে অনুসরণ করে মানুষের উন্নয়নে কাজ করছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, একটা মানুষও খাদ্যাভাবে থাকবে না। ভূমিহীন থাকবে না। রংপুরে ভূমিহীন বেশি ছিল। আমরা তাদের জমিসহ ঘর দিয়েছি। আমি সবাইকে অনুরোধ করবো, সারাদেশের কোথাও যেন ভূমিহীন না থাকে। প্রয়োজনে আমরা জমি কিনে ঘর করে দেবো। এতে আমাদের দারিদ্র্য বিমোচন হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, যার ফলে মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ আরও বৃদ্ধি হয়েছে। আপনারা জানেন, ড. ওয়াজেদ সাহেব ছিলেন পরমাণু বিজ্ঞানী। পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন তিনি। আজকে আমরা সেই রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছি। ২০২৪ সালের মধ্যে আশা করি, সেখান থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবো। এ থেকে উত্তরবঙ্গই সবচেয়ে লাভবান হবে। আমরা চাই, দেশটা আরও উন্নত হবে, এগিয়ে যাবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই অঞ্চলে (রংপুর) শিক্ষার হার কম ছিল। কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও লালমনিরহাটে অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারো স্পেস ইউনিভার্সিটি করে দিয়েছি। রংপুরে বেগম রোকেয়ার নামের একটা ট্রেনিং সেন্টার করেছি। রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় বেগম রোকেয়ার নামেই করে দিয়েছি। তিনিই তো প্রথম শিক্ষার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলে আমরা কিছু লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছি। এই অঞ্চলের প্রত্যেকটা জেলায় মেডিকেল কলেজ হচ্ছে।’

সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এদেশে আর যেন কখনও মঙ্গা দেখা না দেয়। আর কখনও যেন দুর্ভিক্ষ না হয়, এদের মানুষ যেন কষ্ট না পায়। আমাদের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে, মানুষ অনেক স্বচ্ছল হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। আমাদের আরও অনেকদূর যেতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশকে নিয়ে, এদেশের মানুষকে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন— ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়বেন, আমাদেরও লক্ষ্য- আমরা সেটাই করতে চাই।’

অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম ও রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব মিয়া বক্তৃতা করেন।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top