Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমার জন্মদিনে কোনো বই কিংবা আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নাই। আমি কিছুই চাই না। আমার জন্য কিছু করা হোক, এটাও আমার কাম্য নয়। কারণ আমি জাতির পিতার আদর্শ বুকে ধারণ করে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করেছি। আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। কারণ আমি তো আমার বাবা, মা, ভাই সব হারিয়েছি।’

আজ সোমবার দুপুরে প্রথমবারের মতো প্রদত্ত ‘বঙ্গবন্ধু মেডেল ফর ডিপ্লোমেটিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি একটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যত কষ্ট, আঘাত, বাধা আসুক না কেন, যে স্বপ্ন নিয়ে আমার বাবা এই দেশ স্বাধীন করেছেন, তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই হবে। বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত। দারিদ্র্য ও মঙ্গা বলতে দেশে কিছু থাকবে না। দেশের প্রতিটি মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে এবং উন্নত জীবন পাবে। সেটাই আমার লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য স্থির রেখেই আমার পথচলা। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। ইনশাআল্লাহ, একদিন উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষকে আর দরিদ্র থাকতে দেব না। দেশের মানুষ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হবে। উন্নত-সমৃদ্ধ জীবন পাবে। জাতির পিতার সেই পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। আদর্শ ধারণ করছি। স্বাধীনতার লক্ষ্য ও আদর্শ অর্জন করার জন্য আমরা ব্যাপকভাবে নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’

বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনকারী বিজয়ী জাতি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের এই বিজয়ের ফসল প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছবে। দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান ও উন্নত জীবন পাবে। এটাই ছিল জাতির পিতার লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি।’

উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা লাভের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছি। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন। আমরা বাংলাদেশকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা আমরা অর্জন করব ২০৩০ সালের মধ্যে। পাশাপাশি আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে আমরা এই নীতি অনুসরণ করে যাচ্ছি। আমাদের সরকারের আমলে দেশের আর্থ-সামাজিক খাতে যেমন উন্নয়ন হচ্ছে, ঠিক তেমনি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে যাচ্ছি। তা ছাড়া আমরা সমগ্র বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে অবদান রেখে যাচ্ছি।’

তিনি এই বিজয়ের মাসে দেশে আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন সফলভাবে আয়োজনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, মিয়ানমারের নির্যাতনে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদেরকেও তাঁর সরকার আশ্রয় দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি বিশ্বের সকল মানুষের শান্তি ও মানবাধিকার যেন রক্ষা পায়। এ ক্ষেত্রে আমরা সকলের সহযোগিতা কামনা করি। বাংলাদেশ সমৃদ্ধ ও উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে এবং সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে। এটা আমাদের নীতি ও আদর্শ। জাতির পিতা আমাদের যে আদর্শ ও সংবিধান দিয়ে গেছেন, সেখানে আমাদের চার মূলনীতি ছিল জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। সেই নীতি মেনেই দেশের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম অনুষ্ঠানে বক্তব্যের পাশাপাশি ‘বঙ্গবন্ধু মেডেল ফর ডিপ্লোমেটিক এক্সিলেন্স’ অ্যাওয়ার্ড-২০২০ বিজয়ী কূটনীতিকদের নাম ঘোষণা করেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাবেক রাষ্ট্রদূত সাইদ মোহাম্মদ আল মেহরি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. খুরশেদ আলম (অব.) পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top