Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

আবারও ইভ্যালির অফিস বন্ধের নোটিশ

মালিক গ্রেফতারের পর আবারও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির অফিস বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা এখন বাসায় থেকে অফিসের কাজ করবেন বলে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির ফেইসবুক পাতায় ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে গ্রাহকদের আশ্বস্ত করতে ইভ্যালি বলেছে, ‘হোম অফিস’র মধ্যেও তাদের সব কার্যক্রম ‘স্বাভাবিক’ সময়ের মতো চলবে।

প্রতারণার অভিযোগের পর গ্রাহকের করা মামলায় ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল এবং তার স্ত্রী কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করে র‌্যাব। তারপর থেকে ইভ্যালির হাজার হাজার গ্রাহক উৎকণ্ঠায় রয়েছে তাদের পণ্য পাওয়া নিয়ে। কারণ গ্রাহকরা পণ্যের মূল্য আগেই পরিশোধ করেছে।

ইভ্যালির ফেইসবুক পাতায় বলা হয়, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ রোজ শনিবার থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ইভ্যালি এমপ্লয়িগণ নিজ নিজ বাসা থেকে অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

‘হোম অফিস পদ্ধতিতে ইভ্যালির সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে চলমান থাকবে। আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা আমাদের একান্তভাবে কাম্য। ইভ্যালির উপর আস্থা রাখুন, পাশে থাকুন। আপনাদের ভালোবাসাই আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা।’

ওই নোটিশের নিচে রেজাউল করিম নামের একজন মন্তব্য করেন, ‘দারুণ ভদ্রতার সাথে পালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেওয়া যেতে পারে। ইভ্যালি এই ঘোষণার সাথে এটা শিখিয়ে দিল। আপনারা সবাই বাসায় অফিস করেন। শুভ কামনা।’

আসনাদ আহমেদ নামে আরেকজন লিখেছেন, “ইভ্যালি বর্তমানে একটি নেতিবাচক ই-কমার্স ব্রান্ড। গ্রাহক প্রতারণার ফল যে কত তিক্ত হতে পারে, এবার নিশ্চয়ই তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। ভুয়া ব্যবসায়িক মডেল দিয়ে সাময়িক লাভ পাওয়া গেলেও এর সুদূরপ্রসারী খেসারত দিতে এখন প্রস্তুত থাকুন। দেশের নিরীহ অথচ ‘লোভী’ ক্রেতাদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার এমন অপচেষ্টা যেন আর না ঘটে, সে ব্যাপারে প্রশাসন, আইন-শৃংখলা ও বিচার বিভাগসহ সরকারি সংশ্লিষ্ট মহলের কঠোর অবস্থান কামনা করছি। আর আমজনতার উদ্দেশ্যে একটি কথাই প্রযোজ্য ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’। এই ধরনের চটকদার আর লোভনীয় অফারের খপ্পরে পড়বেন, তো মরবেন।”

করোনাভাইরাস মহামারীকালে গ্রাহকদের বহু অভিযোগের মধ্যে গত জুন মাসেও ইভ্যালি তাদের অফিস বন্ধ করে দিয়েছিল। অগাস্টের শেষ দিকে এসে খুলেছিল অফিস। রাসেল-শামীমা গ্রেফতারের পর শুক্রবার রাতে ইভ্যালিতে ‘টি-টেন’ ক্যাম্পেইনের পণ্য বিক্রির কথা থাকলেও অর্ডারগুলো অপেক্ষায় রাখা হয়, গ্রাহকের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি।

এর আগে রাত ২টায় ‘T10’ সংক্রান্ত এক ‘জরুরি নোটিসে’ ইভ্যালির পক্ষ থেকে বলা হয়, “আমাদের প্রধান দুজন সিগনেটরি- সম্মানিত সিইও এবং চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে, আমাদের সেলারদের রেগুলার বিল দিতে পারছি না। এজন্য আমাদের স্বাভাবিক ডেলিভারি কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে। তাই আপনাদের করা আজকের ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ এর T10-এর সকল অর্ডার আপাতত রিকোয়েস্ট হিসেবে জমা থাকবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া মাত্রই আপনাদের ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ এর T10-এর সকল অর্ডার কনফার্ম করা হবে। অর্ডার কনফার্ম হলেই আপনারা পেমেন্ট সম্পন্ন করতে পারবেন।”

মাত্র তিন বছর আগে গড়ে ওঠার পর লোভনীয় অফার ও চটকদার বিজ্ঞাপনে খুব দ্রুতই আলোচনায় আসে ইভ্যালি। কিন্তু গ্রাহকের অভিযোগের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপে বেরিয়ে আসে, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইভ্যালির দেনা ৪০৩ কোটি টাকা।

সর্বশেষ গত ৫ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ইভ্যালির পাঠানো প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ১৫ জুলাই পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির মোট চলতি দায় ৫৪৩ কোটি টাকা। যার মধ্যে মার্চেন্ট বা পণ্য সরবরাহকারীরা পাবেন ২০৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আর গ্রাহকদের পাওনা ৩১১ কোটি টাকা।

গত জুলাইয়ে সঙ্কটের চূড়ান্ত পর্ব শুরুর সময় কোম্পানিতে ১ হাজার ৯৫০ জনের কর্মসংস্থান ছিল, যাদের বড় অংশই বয়সে তরুণ। তবে সঙ্কটে পড়ার পর কর্মী ছাঁটাইয়ের খবরও এসেছে।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top