ঢাকার নবাবগঞ্জে কাকলী আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। কাকলীর পরিবারের দাবি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। গত ৫ই সেপ্টেম্বর উপজেলার শিকারীপাড়া ইউনিয়নের বক্তারনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকেই মৃত কাকলীর স্বামী রাজ্জাকসহ ও তার পরিবারের সবাই পলাতক রয়েছে। ঘর তালাবদ্ধ রয়েছে।
কাকলীর মা ফিরোজা বেগম অভিযাগ করে বলেন, “আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি, ওরা আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে। ওর ঘাড় ভাঙা ছিল। ওর মুখে কানে কোন বিষাক্ত জিনিসের গন্ধ আমি পাইনি। যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে সব সময় মারধর করতো।
ওরাই আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। ওরা যদি অপরাধী না হয় তবে কেন পালিয়েছে। আমি আমার মেয়ের খুনের বিচার চাই।”
তিনি আরও জানান, দুই বছর আগে শিকারীপাড়া ইউনিয়নের বক্তারনগর গ্রামের আব্দুল রাজ্জাকের সঙ্গে তার মেয়ে কাকলীর বিয়ে হয়। বিয়ের সময়ও বরকে স্বর্ণ ও আসবাবপত্রের পাশাপাশি যৌতুক হিসেবে নগদ ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল। এরপরও জামাই আমার মেয়েকে প্রায় টাকার জন্য চাপ দিতো। টাকার জন্য প্রায় ওর উপর নির্যাতন করতো। রাজ্জাক নেশাগ্রস্ত প্রায় থাকতো। ওর বন্ধু অটোচালক বাবুর গাড়িতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শুনেছি। বাবু অনেক কিছু জানে। বাধ্য হয়ে মেয়ের সুখের জন্য কিছুদিন আগে আরো ১ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। তবুও জামাই ও তার পরিবারের লোকজন আমার মেয়ের উপর নির্যাতন করতো। গত ৪ঠা সেপ্টেম্বর রাত ১২টায় মেয়ে আমাকে জানায় ওকে একা রেখে স্বামী গান শুনতে গেছে। রাত ১টার দিকে জামাই রাজ্জাক ফোন দিয়ে আমাকে বলে সকালে এসে আমি যেন মেয়েকে নিয়ে যাই। কি হয়েছে জিজ্ঞাসা করলে সে কোন উত্তর দেয়নি। এরপর ভোর ৩টা ২১ মিনিট জামাই বাড়ির থেকে আমাকে জানায় কাকলীর অবস্থা ভাল না, হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এরপর তাদের সাথে আর যোগাযোগ করেত পারি নাই। সকালে মেয়ের বাসায় গিয়ে দেখি ঘরের বারান্দায় মেয়ের লাশ রেখে ঘরে তালা দিয়ে ওরা সবাই পালিয়ে গেছে। খবর পেয়ে রোববার দুপুরে নবাবগঞ্জ থানার পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করেন।
নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলাম শেখ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষ করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা পাঠানো হয়েছে। বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে পুলিশের নজরদারি করছে । আসামিরা বাড়িতে তালা লাগিয়ে পলাতক রয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে । আশা করি প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে পারবো।