একে একে চার বিয়ে করেন মো. খানজাহান খান (২১)। নির্যাতন আর অত্যাচারের মুখে তিন স্ত্রী সংসার ছাড়েন। চতুর্থ স্ত্রীর সঙ্গে বিবাধে জড়িয়ে নিজেই তালাক দিয়ে গ্রামে এসে ফের পঞ্চম বিয়ে করতে মাকে চাপ দিলে রাজি হননি তিনি। এ কারণে মাকে করেন বেদম মারধর। একপর্যায়ে রাতে নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে গভীর রাতে আত্মহত্যা করেন। সোমবার দিবাগত রাতে এ ধরনের ঘটনা ঘটে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামে। আজ মঙ্গলবার লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, খানজাহান ওই গ্রামের ফজলু ফকিরের ছেলে। ঢাকায় তিনি একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। ১৬ বছর বয়সে প্রথমে পরিবারের অমতে বিয়ে করেন এক সহকর্মীকে। এরপর গত পাঁচ বছরে করেন আরো তিন বিয়ে। স্ত্রীদের না জানিয়ে বিয়ে ও বিভিন্ন অত্যাচার নির্যাতনের কারণে তিন স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। এতে খানজাহান মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে যান। সর্বশেষ গত তিন মাস আগে চতুর্থ বিয়ে করে নিজ কর্মস্থলের কাছে ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিলেন। এ অবস্থায় স্ত্রী জানতে পারেন এর আগে স্বামী খানজাহান আর তিন বিয়ে করেছিলেন। এ নিয়ে দুই জনের মধ্যে বিবাধের সৃষ্টি হলে নববিবাহিত স্ত্রীকে তালাক দেন। এতে তিনি ক্ষোভে কষ্টে নিজ গ্রামে চলে আসেন।
জানা যায়, বাড়িতে এসে মাকে চাপ দেন ফের বিয়ে করাতে। মা হাজেরা বেগম রাজি না হওয়ায় গত দুই দিন ধরে বাড়ির ক্ষতি করা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন। গত সোমবার বিকেলে এ নিয়ে মা প্রতিবাদ করলে খানজাহান মাকে মারধর করে আহত করেন। এ অবস্থায় বাবা ফজলুল ফকির ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলে খানজাহানকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন। একপর্যায়ে রাতে তিনি বাড়িতে এসে নিজ ঘরে প্রবেশ করে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। গভীর রাতে ছোট বোন খাবার নিয়ে ভাইয়ের কক্ষে গিয়ে ডাকাডাকি করলে সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে দেখতে পান ঝুলছে তার লাশ। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রেজাউল করিম জানান, মৃত্যু নিয়ে রহস্য থাকায় লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।