আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, তারুণ্যের জেগে উঠার শক্তির নাম শেখ কামাল। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম শেখ কামাল। ২৬ বছর বয়সী জীবনে তিনি বহুমাত্রিক প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। তিনি দেশের স্বাধীনতা অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। ‘৬৯ এর আন্দোলনে তাঁর অনবদ্য ভূমিকা ছিল। রণাঙ্গনের সাহসী যোদ্ধা ছিলেন, অস্ত্র হাতে নিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়তে পিছপা হননি পাশাপাশি তার সামাজিক শিষ্টাচারও ছিলো অনুকরণীয়।
বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল-এর ৭২ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বাংলাদেশের আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক শেখ কামাল। তিনি আবাহনী ক্রীড়াচক্র প্রতিষ্টা করেন। তিনি একজন দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন। শুধু ক্রীড়া জগতেই তাঁর পদচারণা ছিল এমন নয়; সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও ছিল তার অবাধ বিচরণ। স্পন্দন নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। ছাত্রজীবন থেকেই তার ছিল বহুমাত্রিক প্রতিভা। সবকিছুর পরে তিনি ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী, নম্র, ভদ্র ও সদালাপী।
তিনি বলেন, আজকে যারা ছাত্র রাজনীতি এবং যুব রাজনীতি করছেন তাদের কাছে শেখ কামালের শিষ্টাচার অনুকরণীয়। তিনি রাষ্ট্র প্রধানের সন্তান ছিলেন। ইচ্ছে থাকলে গুরুত্বপূর্ণ পদে যেতে পারতেন কিন্তু পদ-পদবীতে তাঁর আগ্রহ ছিল না। তিনি বঙ্গবন্ধু পাশে থেকে দেশ গড়ায় ভূমিকা রাখতে চেয়েছিলেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে চাই, দেশ গড়তে চাই। কিন্তু আমাদের মধ্যে যদি শিষ্টাচার না থাকে তা হলে আমরা কখনোই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারবো না। শেখ কামালের আচরণ, শিষ্টাচার অনুসরণ করে নিজেদের সংশোধন করতে হবে এবং আগামী দিনের নেতৃত্বের জন্য তৈরি করতে হবে।
দল ক্ষমতায় থাকার কারণে আজ অনেকেই দলে পদ পেতে উদগ্রীব হয়ে যান উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি আদর্শিক দল। আওয়ামী লীগ করতে হলে আদর্শ থাকতে হবে। এই বাংলাদেশের সকল অর্জনের নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ অথচ আজকে আমরা দেখি সংগঠনের নামের আগে ‘আওয়ামী’, ‘লীগ’, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্য্যদের নাম যুক্ত করে সংগঠন দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। আজকে যারা এসব সংগঠন করে বিভিন্ন নামে ব্যানার ফেস্টুন করছে এরা সবাই ধান্ধাবাজ, সুবিধাবাদী ও প্রতারক।
দলের পক্ষ থেকে এই ধরণের প্রতারণামূলক সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে হানিফ বলেন, যারাই অপকর্ম করছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। দেশ অর্থনৈতিক এবং অবকাঠামোগত ভাবে এগিয়ে গেলেও সমাজে নৈতিকতার অবক্ষয় দেখা দিয়েছে। এই ধরণের নৈতিক অবক্ষয়ের পরিবেশ তৈরির পেছনে যেসব ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সংগঠনের যে বা যারা জড়িত তাদের বিরূদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী অভিযান শুরু হয়েছে এবং ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন গ্রেফতারও হয়েছে। এদের শেকড় সমূলে উৎপাটন না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান চলমান থাকবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।
এছাড়াও আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়, মেজবাউর রহমান ভুঁইয়া রতন, সাজেদা বেগম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোরশেদ হোসেন, মিরাজ হোসেন, মহিউদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির, দফতর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ ও আইন সম্পাদক এডভোকেট জগলুল কবির প্রমুখ৷ সভা পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।