বহুল আলোচিত কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুর্নীতি মামলার তদন্ত শেষ করেছে দুদক।
বুধবার (২৮ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক।
তিনি জানান, সোমবার আদালতে অভিযোগপত্র জমা হয়েছে। তবে অভিযোগ শুনানির তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি।
বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, মামলাটির তদন্ত কাজ শেষ করেছি। অভিযোগপত্র জমা দিয়েছি। মামলার আসামি চুমকি কারণকে গ্রেফতারেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
মেজর (অব.) হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছেন মামলায় অভিযুক্ত প্রদীপের স্ত্রী চুমকি।
জানা গেছে, চুমকির ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকার। বাকি সম্পদ অর্থাৎ, ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জনের প্রমাণ পেয়েছে দুদক।
পাথরঘাটায় ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরের বাড়ি, ৪৫ ভরি স্বর্ণ, একটি প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস, কক্সবাজারের একটি ফ্ল্যাট ও ব্যাংক হিসাবের মালিক প্রদীপের স্ত্রী চুমকি। প্রদীপের ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থে স্ত্রী চুমকি কারণ এসব সম্পদ অর্জন করেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে উঠে এসেছে।
এছাড়া চুমকি নিজেকে মাছ ব্যবসায়ী দাবি করলেও তার মাছ ব্যবসার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি দুদকের তদন্তে।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক বলেন, দুদকের করা মামলায় সাক্ষী রাখা হয়েছে ২৯ জনকে। প্রদীপ দম্পতি ৪৯ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫৭ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। এছাড়া ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। তারা দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২০০৪ এর ২৬ (২), ২৭ (১) মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২), ৪ (৩) ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অপরাধ করেছেন। দুদকের তদন্ত শেষে এসব প্রমাণিত হওয়ায় আদালতে তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা ১৩ পৃষ্ঠার চার্জশিট জমা দিয়েছেন। এখনও অভিযোগ দাখিলের শুনানির তারিখ ধার্য হয়নি। আদালত এখন বন্ধ রয়েছে।