ইরানের মূল পারমাণবিক স্থাপনা নাতাঞ্জ-এ দুর্ঘটনাকে সন্ত্রাসী কাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করেছেন স্থাপনাটির প্রধান। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে এ কথা জানানো হয়েছে।
তেহরানের দক্ষিণাঞ্চলে নাতাঞ্জ কেন্দ্রে গতকাল রোববার হঠাৎ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
অ্যাটমিক এনার্জি অর্গানাইজেশন অব ইরানের (এইওআই) প্রধান আলী আকবর সালেহি বলেছেন, ‘আজকের আক্রমণের মাধ্যমে এটা পরিষ্কার, পরমাণু বিজ্ঞানে ইরানের অগ্রগতি ও উন্নয়ন এবং চলমান পরমাণু আলোচনার শত্রুরা নাতাঞ্জের পরমাণু প্রযুক্তিতে সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে।’
সালেহি আরও বলেন, ‘বিশ্বাসঘাতক ও সন্ত্রাসী কাণ্ড যারা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার ইরানের রয়েছে।’
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর একটি শাখা আইআরজিসির এক প্রতিবেদনে আলী আকবর সালেহির এই বক্তব্য প্রকাশ করা হয়।
এদিকে, ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সাইবার হামলার ফলে ইরানি পরমাণু স্থাপনায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে ইসরায়েল সরকার এ নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি।
তবে রোববার বিকেলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘ইরানের বিরুদ্ধে বিস্তর লড়াই বাকি। কিন্তু আজ যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে কালও যে একই অবস্থা থাকবে এমনটি নয়।’
অন্যদিকে, শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি নাতাঞ্জ কেন্দ্রে নতুন সেন্ট্রিফিউজ উদ্বোধন করেন। সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদনে সেন্ট্রিফিউজ যন্ত্রটি কাজে লাগে। পরে ওই ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে রিয়্যাক্টর ফুয়েল বা পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা যায়। ইরান জানিয়েছে, ভূগর্ভে নতুন করে দেড়শ সেন্ট্রিফিউজ চালু করা হচ্ছে।
এই সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদনকেও ২০১৫ সালের চুক্তির আরেক দফায় লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী ইরান শুধুমাত্র বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য সীমিত পর্যায়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে।
২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্র ওই চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর কার্যত ইরান আর ওই চুক্তির পরোয়া করছে না। নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন নতুন করে ইরানকে চুক্তিতে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।