দেশের বরেণ্য অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান আর নেই। (ইন্নালিল্লাহি- রাজিউন)। আজ সকাল ৯ টার দিকে তিনি রাজধানীর সূত্রাপুরের নিজ বাসায় মারা যান। তার চলে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে কোয়েল। তিনি বিষয়টি জানিয়েই কান্নায় ভেঙে পড়েন। এর আগে কয়েকদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এ অভিনেতাকে। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় রাজধানীর গেন্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন এ টি এম শামসুজ্জামানকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আইসোলেশনে রাখা হয়। এর আগেও একাধিক শারীরিক জটিলতা নিয়ে বিভিন্ন সময় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন জনপ্রিয় এ অভিনেতা।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা, পরিচালক, কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপকার ও গল্পকার এ টি এম শামসুজ্জামান। ১৯৪১ সালে নোয়াখালীর দৌলতপুরে গুণী এই শিল্পী জন্মগ্রহণ করেন।
এ টি এম শামসুজ্জামান অভিনয়ের জন্য পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক।
এ টি এম শামসুজ্জামানের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার ভোলাকোটের বড় বাড়ি আর ঢাকায় থাকতেন দেবেন্দ্রনাথ দাস লেনে। পড়াশোনা করেছেন ঢাকার পগোজ স্কুল, কলেজিয়েট স্কুল, রাজশাহীর লোকনাথ হাই স্কুলে।
পগোজ স্কুলে তার বন্ধু ছিল আরেক অভিনেতা প্রবীর মিত্র। ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট হাই স্কুল থেকে। তারপর জগন্নাথ কলেজ ভর্তি হন। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে এ টি এম শামসুজ্জামান সবার বড়।
১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ চলচ্চিত্রে সহকারি পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন। প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের জন্য। ছবির পরিচালক ছিলেন নারায়ণ ঘোষ মিতা, এ ছবির মাধ্যমেই অভিনেতা ফারুকের চলচ্চিত্রে অভিষেক।
এ পর্যন্ত শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনী লিখেছেন তিনি। প্রথম দিকে কৌতুক অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করলেও ১৯৬৫ সালে অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র পর্দায় আগমন তার। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন তিনি।
১৯৮৭ সালে কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দায়ী কে?’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। তিনি রেদওয়ান রনি পরিচালিত চোরাবালিতে অভিনয় করেন ও শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।