Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

বদলাতে চলেছে বিমান যাত্রার সংজ্ঞা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জেরে

এই সময়ে দাঁড়িয়ে সারা পৃথিবীতে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। তবে এ নিয়ে চর্চা কিন্তু হাল আমলে শুরু হয়নি। যন্ত্রকে কীভাবে মানুষের মতো চিন্তা করানো যায় তা নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে আধুনিক কম্পিউটার তৈরি হওয়ার আগেই। তবে এই ভাবনার জনক হিসেবে উঠে আসে, অ্যালেন টুরিং-এর নাম। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে ভাবনায় এগিয়ে আসেন টুরিং। ১৯৫০ সালে তাঁর লেখা ‘কম্পিউটিং মেশিনারি অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স’ পেপারে এই নিয়ে আলোচনা করেন। তার মত ছিল, একটি যন্ত্রকে মানুষের সমান বুদ্ধি দেয়া সম্ভব। এবং যখন যন্ত্র মানুষের মতো চিন্তা করতে পারবে তখন তাকে বুদ্ধিমান বলা উচিত। এখন গোটা জগতে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের রমরমা। বিশেষ করে করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী যখন আন্তর্জাতিক ভ্রমণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তখন একটি অস্ট্রেলিয়ান প্রযুক্তি সংস্থা ইলেনিয়াম অটোমেশন যাত্রীদের সুবিধার জন্য এমন কিছু প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে যা ভবিষ্যতে বিমান ভ্রমণের ধারণাই বদলে দিতে পারে । তারা একটি যাত্রীবাহী কিয়স্ক তৈরী করেছে। যা পোর্টেবল, ক্লাউড-ভিত্তিক । এর মাধ্যমে কারোর সাহায্য ছাড়াই যাত্রীদের হেলথ স্ক্রিনিং করে বিমান বন্দরে চেক-ইন করার সুবিধা মিলবে । বিভিন্ন দেশ যখন বিমানে যাত্রার সময়ে করোনা ভাইরাস , ফ্লু এর লক্ষণ যুক্ত যাত্রীদের আলাদা রাখার চেষ্টা করছে তখন এই মেশিন বলে দেবে কোন যাত্রীর শরীরে এই রোগের লক্ষণ রয়েছে। কোনও যাত্রী বিমানে ওঠার আগে ডিভাইসের সামনে যদি দাঁড়ান , তাহলে এটি অসুস্থতার সম্ভাব্য লক্ষণগুলোর পাশাপাশি ব্যক্তির তাপমাত্রা, হার্টের হার এবং শ্বাস প্রশ্বাসের হার শনাক্ত করে দেবে কোনো সংস্পর্শ ছাড়াই। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দ্বারা পরিচালিত এই মেশিন ভয়েস স্বীকৃতি এবং বায়োমেট্রিক শনাক্তকরণের মতো কাজ সম্পাদন করে দেবে যাতে সাধারণত মানব বুদ্ধির প্রয়োজন হয়। অস্ট্রেলিয়ান মেশিন নির্মাণ এই কোম্পানির প্রধান কার্যনির্বাহী অ্যারন হর্নলিমান বলেন, “যখন কোভিড -১৯ এর প্রকোপ বাড়লো তখন আমরা ভাবতে শুরু করেছিলাম কীভাবে লোকেরা বিমানবন্দরে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে,”। অ্যারন আশা করেন যে, মহামারির মধ্যেও বিমান পরিষেবা যাতে সচল থাকে তার জন্য তাদের বানানো ডিভাইসটি লক্ষণাত্মক যাত্রীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের বিমানে প্রবেশ করা থেকে বাধা দিয়ে পরিষেবাগুলো পুনরায় চালু করতে সহায়তা করবে । ২০১৬ সালে এলেনিয়াম অটোমেশন প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। যার মাধ্যমে বিমান পরিষেবায় কার্যত বিপ্লব ঘটে যায়। কারণ এই মেশিন যাত্রীদের টার্মিনাল দিয়ে দ্রুত এগিয়ে যেতে এবং বিমান ধরার কাজকে অনেক সহজ করে দিয়েছে । হর্নলিম্যান বলেছেন , কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে তাদের মেশিন নিখুঁতভাবে বহুল পরিমাণ ডেটা সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ করতে সক্ষম। মেশিনে সুক্ষ থার্মাল ডিটেক্টর বসানো আছে যার মাধ্যমে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেনস অসুস্থতার লক্ষণযুক্ত কোনো যাত্রীকে শনাক্ত করে তাকে বিমান বন্দরে প্রবেশে সঙ্গে সঙ্গে বাধা দেবে। বর্তমানে এহাদ এয়ারওয়েজ এবং অস্ট্রেলিয়ার আভালন বিমানবন্দর স্ক্রিনিংয়ের জন্য এই মেশিন ব্যবহার করছে। হর্নলিম্যান বলেছেন যে, তাঁর সংস্থাটি প্রবীণদের কেয়ার সেন্টার এবং সরকারি অফিসগুলোর সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করেছে, তিনি আশাবাদী ভবিষ্যতে অনেকেই এই প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে অবগত হয়ে একে প্রয়োগ করতে আগ্রহী হবেন।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top