Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

খেলাপি ঋণ ৪১ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা- রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪১ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা।

রোববার জাতীয় সংসদে মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানিয়ে বলেন, বর্তমানে (৩০ জুন ২০২০) রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মোট এক লাখ ৮২ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪১ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আট হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১৫ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ পাঁচ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ চার হাজার ৯০ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সাত হাজার ১৫৬ কোটি টাকা ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫৫৮ কোটি টাকা।

খেলাপি ঋণ আদায়ে সরকার নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলো বিকল্প-বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি ব্যবহার করছে। এক্ষেত্রে সফল না হলে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী আরও জানান, গত ৫ বছরে (২০১৫-২০১৯) সোনালী ব্যাংক পাঁচ হাজার ৩০৫ কোটি ২৯ লাখ, জনতা ব্যাংক দুই হাজার ৮৬১ কোটি ৬৩ লাখ, অগ্রণী ব্যাংক দুই হাজার ৯৫৫ কোটি ৩৪ লাখ, রূপালী ব্যাংক এক হাজার ৮৫ কোটি ৩০ লাখ, বেসিক ব্যাংক ৮৮০ কোটি ৮৬ লাখ ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এক হাজার ৭১ কোটি ৮ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করেছে।
ঋণ মওকুফ : নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ১ জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত মোট ১৪ হাজার ৫৬০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ঋণ মওকুফ করেছে।

হাবিবর রহমানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বর্তমানে আমদানী পর্যায়ে ১৬ হাজার ১টি শুল্ক মামলার বিপরীতে অনাদায়ী রাজস্বের পরিমাণ সাত হাজার ৫৮৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

হারুনুর রশীদের প্রশ্নের জবাবে আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত সাত হাজার ৫৫৫ দশমিক ৭৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তার প্রদানে ভারত ও বাংলাদেশ ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত ৯০৪ দশমিক ৭৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ ছাড় হয়েছে। তবে এই অর্থনৈতিক গতি মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সরকারের মেয়াদেই গতি লাভ করেছে। বর্তমান সরকারের সময়ে তিনটি এলওসি চুক্তির আওতায় সাত দশমিক ৫৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ সব ঋণের আওতায় অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। যা আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ব্যক্তিখাতের দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করেছে।

মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, আমদানি-রফতানিতে অবমূল্যায়ণ ও অতিমূল্যায়নের মাধ্যমে মুদ্রাপাচারের কথা আমরা পত্রপত্রিকায় প্রায়ই দেখতাম। এ সংক্রান্ত অভিযোগ আজকাল আর শুনি না। তবে, সুনির্দিষ্ট মানিলন্ডরিংয়ের অভিযোগ পাওয়ার ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিয়মিতভাবে তা খতিয়ে দেখছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top