সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতাধনী সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দ মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সেবার (এমএফএস) মাধ্যমে বিতরণের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এ জন্য পরীক্ষামূলকভাবে আট বিভাগের ভিন্ন আটটি ইউনিয়নের ১৩ হাজার ৮৪৫ জন সুবিধাভোগীর মধ্যে বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এবং বিধবা ভাতা বিতরণ করা হবে।
চারটি এমএফএস অপারেটরের মাধ্যমে এই ভাতা বিতরণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। এরই মধ্যে নগদ, বিকাশ, শিওরক্যাশ এবং রকেটকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে। শিগগিরই এসংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু হবে।
পরীক্ষামূলক সেবার অংশ হিসেবে ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যানশিয়াল সেবা নগদ কুমিল্লা ও লালমনিরহাট জেলার দুটি ইউনিয়নের চার হাজার ১১৪ জনকে ভাতা প্রদান করবে, যা মোট তালিকার প্রায় ৩০ শতাংশ। সমাজসেবা অধিদপ্তরের দেওয়া তালিকা অনুসারেই ভাতা বিতরণের পরীক্ষা চালাবে এমএফএস অপারেটরগুলো। গোপালগঞ্জ ও সিলেট জেলার দুটি ইউনিয়নের তিন হাজার ৬৯৫ জন ভাতা গ্রহণকারীর ওপর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালাবে বিকাশ। শিওরক্যাশ ভোলা এবং নীলফামারী জেলার দুই ইউনিয়নে তিন হাজার ৩৩১ জন ভাতাগ্রহীতা এবং রকেট নাটোর ও খুলনা জেলার দুই হাজার ৭০৫ জনকে ভাতা দেবে।
সরকার টু গ্রাহক (জিটুপি) পদ্ধতির এই ফান্ড বিতরণের পুরো কার্যক্রম চলবে সমাজসেবা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে। তারাই এমএফএস অপারেটরগুলোকে তালিকা সরবরাহ করবে। এমএফএস অপারেটরদের মাধ্যমে সমাজসেবা অধিদপ্তরের সরকারি ভাতা বিতরণের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মিশুক। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নগদ মনে করে এটি সরকারের দিক থেকে খুবই সময়োচিত একটি সিদ্ধান্ত।’
‘আমার বিশ্বাস এই পদক্ষেপের কারণে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভাতা বিতরণ একদিকে যেমন স্বচ্ছ হবে, অন্যদিকে আবার সুবিধাভোগীরাও খুবই সহজে এবং নিরাপদে তাঁদের ভাতা নির্দিষ্ট সময়ে পেয়ে যাবেন। তা ছাড়া সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাজের মধ্যেও ডিজিটাইজেশনকেও ত্বরান্বিত করবে এই পদক্ষেপ,’ বলেন মিশুক।
চলতি বছর বাজেটে সরকার সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সব মিলে ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে, যা আগের বছরের চেয়ে ১৬.৭৪ শতাংশ বেশি। এর আগে গত এপ্রিল মাসে করোনায় কাজ হারানো ৫০ লাখ পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আড়াই হাজার টাকা করে বিশেষ বরাদ্দ দেন। এই তালিকায় চারটি এমএফএস অপারেটর থাকলেও নগদ ১৭ লাখ পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর সতায়তা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পায়। তখন বিকাশ ১৫ লাখ, রকেট ১০ লাখ এবং শিওরক্যাশ আট লাখ পরিবারকে ভাতা বিতরণের দায়িত্ব পেয়েছিল।