চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক লিমিটেডের করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন ‘করোনাভ্যাক’ দেশটিতে জরুরীভাবে ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীসহ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন এমন নাগরিকদের টিকা দিতে দেশটিতে একটি প্রকল্প শুরু হয়েছে। ওই প্রকল্পের অংশ হিসেবেই করোনাভ্যাক ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
খবরে বলা হয়, করোনাভ্যাকের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল গ্রুপ অর্থাৎ সিনোফার্মের নিজস্ব ইউনিট চায়না ন্যাশনাল বায়োটেক গ্রুপের (সিএনবিজি) জানিয়েছে, তাদের একটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনও জরুরী ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে। সিএনবিজি’র দু’টি ভ্যাকসিন তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রয়েছে। তবে এদের মধ্যে কোনটিকে অনুমতি দেয়া হয়েছে তা উল্লেখ করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
জুলাই থেকেই স্বাস্থ্যকর্মীসহ উচ্চঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে পরীক্ষামূলক টিকা দেয়া শুরু করেছে চীন। গত সপ্তাহে রাষ্ট্রায়ত্ত মিডিয়ায় দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, বসন্ত ও শীতের সময় করোনা সংক্রমণ ফের আসতে পারে আশঙ্কায় এই জরুরী ব্যবহারের মেয়াদ ও আওতা আরেকটু বৃদ্ধি করার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে কর্তৃপক্ষ।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ মাধ্যম শিনহুয়া শুক্রবার জানায়, জুলাইয়ে চালু হওয়া ওই বিশেষ প্রকল্পের আওতায় দু’টি পরীক্ষাধীন ভ্যাকসিনকে জুনে অনুমতি দেয়া হয়। তখন অবশ্য ভ্যাকসিনের নাম নির্দিষ্ট করা হয়নি।
মানুষকে পরীক্ষামূলকভাবে কোন ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে বা কতজনকে এই পর্যন্ত দেয়া হয়েছে, সেই সম্পর্কিত তেমন তথ্য চীন সরকারিভাবে জানায়নি। তবে দু’টি টিকার মধ্যে সিনোফার্মের একটি ভ্যাকসিনের কথা সম্প্রতি কোম্পানির তরফ থেকে জানা গেলেও, সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিনের বিষয়টি এর আগে জানা যায়নি। বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত এমন এক কর্মকর্তাই সবে রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে রাষ্ট্রীয় মিডিয়া গ্লোবাল টাইমস জানায়, জরুরী ব্যবহারের এই প্রকল্পের পূর্বে, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীরা বিদেশ সফরে গেলে, সরকারি সংস্থা সিএনবিজি’র প্রস্তুতকৃত দু’টি ভ্যাকসিনের একটি নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়। এছাড়াও চীনের সামরিক বাহিনী ক্যানসিনো বায়োলজিকস-এর একটি পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন আগেই ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল।
বিশ্বজুড়ে বর্তমানে করোনাভাইরাস-বিরোধী ৭টি টিকার চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষা চলছে। এদের মধ্যে ৪টিই চীনের। তবে কোনো ভ্যাকসিনই ট্রায়ালের চূড়ান্ত ধাপ এখনও অতিক্রম করেনি। এই ধাপ অতিক্রম করলেই সম্পূর্ণ নিশ্চিত হওয়া যাবে যে এসব ভ্যাকসিন নিরাপদ ও কার্যকর। গণহারে ব্যবহারের জন্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেতে এই দু’টি শর্ত অবশ্য পালনীয় বলেই বিবেচিত হয়। বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে ৮ লাখেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন।