Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

১ সেপ্টেম্বর থেকে গণপরিবহনে আগের ভাড়া

আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে শর্ত সাপেক্ষে গণপরিবহনে আগের ভাড়া কার্যকর হবে বএ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ তথ্য জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ শনিবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর নিজ বাসভবন থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঢাকা জোনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এ তথ্য জানান তিনি।

এর আগে করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়। গত ৩১ মে সরকার আন্তঃজেলা বাস পরিষেবাসহ সকল বাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

এ প্রসঙ্গে গত ২৫ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে বলেন, সরকার করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়। গাড়ির আসন সংখ্যা অর্ধেক খালি রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে ভাড়া সমন্বয় করে এ সময়ের জন্য। শুরুতে কিছু পরিবহন প্রতিশ্রুতি মেনে চললেও এখন অনেকেই তা মানছেন না। ঈদের প্রাক্কালে স্পষ্টভাবেই নানা অভিযোগ এসেছে।

এদিকে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণা সাময়িকী “দ্য ল্যানসেট” বাংলাদেশে করোনা নিয়ে ভয়ংকর ভবিষ্যত বাণী করেছে। সাময়িকীটি এক প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, বাংলাদেশজুড়ে লাগামহীনভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বাজে অবস্থা এখনও আসেনি। যেভাবে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি ভাঙছে তাতে ভবিষ্যত ভয়ংকর।

দ্য ল্যানসেটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফি নির্ধারণের পর পরীক্ষার হার কমে প্রতিদিন ১ হাজার মানুষে ০.৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আগস্টে প্রতি এক হাজার মানুষে ০.৬ হারে টেস্ট হয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এমিনেন্সের প্রধান শামীম তালুকদার দ্য ল্যানসেটকে বলেন, এই মহামারী বাংলাদেশের ‘অনৈতিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে’ উন্মোচিত করেছে।

‘একদম শুরু থেকেই সরকার কোভিড-১৯ টেস্টিং সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছে,’ দাবি করে তিনি বলেন, ‘শুরুতে বেসরকারি খাতকে টেস্ট করতে দেওয়া হয়নি। এখন আবার ফি নেওয়া হচ্ছে। এতে গরীব মানুষরা বাদ পড়ছেন।’

তালুকদার ঢাকার কয়েকটি কবরস্থান ঘুরে সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কবরস্থান পরিচালনাকারীরা তাকে বলেছেন, সরকারি হিসাবের চেয়ে দেশে চারগুণ বেশি মৃত্যু হচ্ছে। অনেকে উপসর্গ নিয়ে মারা যাচ্ছেন, কিন্তু করোনা পরীক্ষা হয়নি।
বাংলাদেশের আইইডিসিআর-এর সাবেক পরিচালক মাহমুদুর রহমানও টেস্টের জন্য ফি নির্ধারণ করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন, ‘মানুষের কাছ থেকে টাকা নেওয়া সত্যি সমস্যা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে গরীবদের জন্য টেস্ট করানও এখন কষ্টকর। মহামারীর সময়ে মানুষের কাজ নেই। টাকা নেই। এমন অবস্থায় সরকারের টাকা নেওয়া উচিত হচ্ছে না।’

ঢাকার আরেকজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ল্যানসেটকে বলেন, ‘১৬৫ মিলিয়ন মানুষের দেশে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টেস্ট হচ্ছে, এটি আসলে কিছুই না।’

ওই চিকিৎসকের শঙ্কা, ‘এই মহামারী আরও অনেক দিন থাকবে। আমি ভয় পাচ্ছি শীত আসলে কী হবে। মানুষও ভয় পাচ্ছে।’

শামীম তালুকদার বলছেন, ‘সরকারের নজর এখন অর্থনীতির দিকে। কিন্তু কোভিড-১৯ গ্রাম থেকে গ্রামে ছড়িয়ে পড়বে। মারা যাবে আরও বেশি মানুষ।’

অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধক ব্যবস্থার ওপর প্রতিবেদন করে ২০১৯ সালে মেডিকেল জার্নালিস্ট’স অ্যাসোসিয়েশন থেকে পুরস্কার জেতা সোফির সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনও কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি।

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের বিরামহীন তাণ্ডবে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও ক্ষমধার রাষ্ট্র আমেরিকা। এর প্রভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ব্রিটেন, ব্রাজিল, স্পেন, ইতালি, ফ্রান্স ও মেক্সিকোর মতো দেশগুলো। এছাড়া বর্তমানে করোনাপার হটস্পটে পরিণত হয়েছে প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top