ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবল (আইটিসি), ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) ও ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্র্যান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) সেবার ক্ষেত্রে ৫ শতাংশের অতিরিক্ত ভ্যাট তুলে নিয়েছে সরকার। এতে মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) জটিলতায় গ্রাহক পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দাম বাড়ার যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা দূর হলো বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) হিসাবে জুন শেষে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সংযোগ দাঁড়িয়েছে ৮৬ লাখ, যা ফেব্রুয়ারি শেষে ছিল ৫৭ লাখ ৪৩ হাজার। আইএসপিএবির মতে, একটি সংযোগের বিপরীতে চার থেকে পাঁচজন ব্যবহারকারী রয়েছেন। ফলে মোট গ্রাহক সাড়ে তিন কোটির বেশি।
সরবরাহকারীদের সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি মোহাম্মদ আমিনুল হাকিম বলেন, সরকার সুবিধাটি দেয়ায় গ্রাহক পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দাম আর বাড়বে না।
এর আগে গত জুলাই মাসে আইএসপিএবি জানিয়েছিল, ভ্যাট নিয়ে তাদের মূল সমস্যা হলো ব্যান্ডউইডথ কেনার সময় তারা নিজেরা দিয়ে আসে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। আর ইন্টারনেট গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করেন ৫ শতাংশ।
কোনো রেয়াত পাওয়া যায় না। নতুন কাঠামোর ফলে গ্রাহকপর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দাম ৩০ শতাংশ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল সংস্থাটি। ভ্যাটের হার কমানোর প্রজ্ঞাপনটি গত মঙ্গলবারের তারিখ দিয়ে জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ফলে এখন আইটিসি, আইআইজি ও এনটিটিএন এবং গ্রাহক পর্যায়ে ভ্যাটের হার দাঁড়াল ৫ শতাংশ।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে গ্রাহক পর্যায়ে ৫ শতাংশ ও মূল্য সংযোজনের অন্যান্য পর্যায়ে (আইটিসি, আইআইজি ও এনটিটিএন) খাতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট নির্ধারিত হয়। এই জটিলতা নিরসনে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নেতৃত্বে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান এবং বিটিআরসি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার আলোচনায় ইন্টারনেটের প্রতিটি স্তরে (আইটিসি, আইআইজি, এনটিটিএন) ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন হয়। চলতি অর্থবছরের বাজেটে আবার গ্রাহক পর্যায়ে ৫ শতাংশ ও অন্যান্য স্তরে (আইটিসি, আইআইজি ও এনটিটিএন) ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হয়েছিল, যার সমাধান হলো এনবিআরের নতুন প্রজ্ঞাপনে।