Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

ভিডিও ফাসেঁর ব্লাকমেইল করায় প্রেমিক আল কাইয়ূম নিপুণকে হত্যা পলাশ প্রতিনিধি

নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় পরকীয়ার জেরে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ফাসেঁর ব্লাকমেইল করায় প্রেমিক আল কাইয়ূম নিপুণকে হত্যা করেছেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পলাশ থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ূন কবির জানান, প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমিকে গ্রেপ্তার করলে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে লোমহর্ষক বর্ণনা দেন সুমি।

নিহত কাইয়ুম নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার গোতাশিয়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে।  তিনি নরসিংদীর ভেলানগর এলাকায় মা, ভাই, স্ত্রী ও ১১ মাসের মেয়েকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন।

পুলিশ জানায়, ২০১২ সালে নিহত কাইয়ূমের সঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঘোড়াশাল পৌর এলাকার ভাগ্যের পাড়া গ্রামের মোকারমের স্ত্রী জেসমিন আক্তার সুমির পরিচয় হয়। এরপর তারা পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তুলেন। সম্পর্ক চলাকালে নিহত নিপুণ নিজের মোবাইলে তাদের শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে রাখেন। সেই ভিডিও পরিবারকে দেখানো ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে গত ৬ মাস ধরে জেসমিন আক্তার সুমির কাছ থেকে টাকা-পয়সা নেওয়া শুরু করেন নিপুণ। নিপুণের ব্লাকমেইলে দিনদিন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন সুমি। পরে তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৩ মার্চ রাত সাড়ে ৯টায় সুকৌশলে নিহত নিপুণকে সুমি তার বাড়িতে ফোন করে ডেকে এনে শারীরিক সম্পর্ক  ও টাকা নেওয়ার কথা বলেন। এ সময় প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমি পানির সঙ্গে ৫টি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে নিপুণকে খাওয়ালে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।

পুলিশ আরও জানায়, পরে রাত আড়াইটার দিকে সুমি বিছানার চাদর গলায় পেঁচিয়ে নিপুণকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহটি চাদর দিয়ে পেঁচিয়ে বস্তাবন্দি করে বাড়ির সেফটি ট্যাংকে লুকিয়ে রাখেন।

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মো. নাসিরউদ্দিন জানান, এ ঘটনায় নিহতের ভাই জাহিদুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে সোমবার রাতে প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমির নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

উল্লেখ্য, নিহত নিপুণ গত ৩ মার্চ সন্ধ্যায় নিখোঁজ হলে তার ছোট ভাই ৪ মার্চ নরসিংদী মডেল থানায় জিডি করেন। পরে মোবাইলের কললিস্ট বের করে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রেমিকা সুমির মোবাইলের একাধিক যোগসূত্র পায় পুলিশ। পরে সুমিকে আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তার দেওয়া তথ্যমতে সোমবার সন্ধ্যায় নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহেদ আহমেদের নেতৃত্বে পলাশ থানার ওসি শেখ মো. নাসির উদ্দিন ও নরসিংদী মডেল থানার ওসি সৈয়দুজ্জামানসহ পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে সুমির  বাড়ির সেফটি ট্যাংকের ভেতর থেকে নিপুণের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top