অসহায় ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোই তাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে হাতে হাত রেখে কাজ করে যাচ্ছেন একদল স্বপ্নবাজ তরুণ। যারা স্বপ্ন দেখেন সামাজিক উন্নয়নের। এই স্বপ্ন থেকেই সিলেটের বিশ্বনাথে ২০১১ সালে ১২ জন গড়ে তোলেন দাতব্য সংগঠন ‘বাতিঘর’। বর্তমান সদস্য ৩০ জন। এ ছাড়াও বিভিন্নভাবে সম্পৃক্ত আছেন প্রায় শতাধিক মানুষ। এলাকার উন্নয়নে তারা করে যাচ্ছেন অক্লান্ত পরিশ্রম।
সংগঠনটি পরিচালনা করছে বাতিঘর পাঠাগার, বাতিঘর পাঠশালা, ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং, ব্লাড ডোনার গ্রুপ ইত্যাদি। তাদের পাঠশালায় রয়েছে চার হাজারেরও অধিক বই ও পুরনো পত্রিকা। এ ছাড়াও শিশুদের বই সমৃদ্ধ শিশু কর্নার। প্রাথমিক শিক্ষায় মানসম্পন্ন শিক্ষা ও সমতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বাতিঘর চালু করেছে বাতিঘর পাঠশালা। আর পাঠশালায় চলছে দরিদ্র পরিবারের শিশুদের বিনামূল্যে পাঠদান। দেয়া হয় শিক্ষা উপকরণ। বর্তমানে এই পাঠশালায় অধ্যয়নরত আছেন ৭৫ জন শিশু। এ ছাড়াও ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং বেশ উপকারে আসছে শিক্ষার্থীদের। বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের পাশাপাশি সারা বছরজুড়েই চলে স্বেচ্ছায় রক্তদান। ৫টি ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার ৮শ’ মানুষের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করেছে তারা। এর পাশাপাশি ‘বাতিঘর ব্লাড ডোনার গ্রুপ’ এখন পর্যন্ত ১৬শ’ রোগীকে রক্তের ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
প্রতিষ্ঠার পর পেরিয়ে গেছে ৮ বছর। সংগঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা মো. মাস-উদ-হাসান বলেন, উপজেলার শিক্ষার্থীদের অনেকেই দেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী হয়ে উঠছে। মানুষের মাঝে বই পড়ার অভ্যাস বৃদ্ধি পেয়েছে। শিশুদের মাঝেও পাঠের অভ্যাস গড়ে উঠছে। প্রাথমিক শিক্ষায়ও ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। তবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাতিঘরের কার্যক্রম আরো বেগবান করার সুযোগ আছে। পর্যাপ্ত সহযোগিতা পেলে বাতিঘর আরো বৃহৎ পরিসরে কাজ করার যোগ্যতা রাখে।
এত কার্যক্রম পরিচালনার অর্থ যোগান সম্পর্কে জানতে চাইলে বাতিঘরের আরেক উদ্যোক্তা মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, শুরুর দিকে কেবল সদস্যদের চাঁদায় চলতো। এখন সদস্যদের চাঁদার পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সহযোগিতায় পরিচালিত হয়ে আসছে।
Share!